
ঢেঙ্কানাল জেলার কমলাঙ্গা গ্রামে শুক্রবার রাতে প্রবেশ করে ১৩টি হাতির একটি দল। যেখানে হাতির দল গিয়েছিল তার পাশেই তৈরি হচ্ছিল রেল লাইন। আর সেখানেই পড়ে হাই ভোল্টেজের ইলেকট্রিক তার। রাতের অন্ধকারে ওই হাই ভোল্টেজ তারের সংস্পর্ষে এসে যায় ১৩টি হাতি। তারপরেই সব শেষ। ঘটনাস্থলে মারা যায় ৭টি হাতি। বাকি ৬টি হাতি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর ভাবে জখম হয়েছে বলে জানিয়েছে বন দফতরের কর্মীরা। চিকিৎসা চলছে ওই ৬টি হাতির।
শনিবার সকালে গ্রামবাসীদের নজরেই প্রথম আসে গোটা ব্যাপারটি। তাঁরা দেখেন সার দিয়ে পড়ে রয়েছে হাতিদের দেহ। এরপরেই খবর দেওয়া হয় বনদফতরে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (DFO) সুদর্শন পাত্র। এ দিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই বিদ্যুতের তার কমপক্ষে ১৫ ফুট উঁচুতে থাকা উচিত৷ কিন্তু তা ছিল মাত্র ৮ ফুট উঁচুতে৷ গোটা ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। রেল দফতর এবং বিদ্যুৎ বিভাগকেই হাতিগুলির মৃত্যুর জন্য দায়ী করছেন স্থানীয়রা। ডিএফও সুদর্শন পাত্র জানিয়েছে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
ঢেঙ্কানাল জেলায় হাতির মৃত্যু নতুন ঘটনা নয়। তবে পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে একই ঘটনায় একসঙ্গে এত হাতির মৃত্যু এর আগে কখনও হয়নি। তবে এর আগে ২০১২ সালে, ওড়িশার গঞ্জাম জেলার রম্ভা এলাকায় তীব্র গতির এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ৬টি হাতির। চলতি বছরের এপ্রিল মাসেও ঝারসুগুডা জেলায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ৪টি হাতির।
ওড়িশার ওয়াইল্ডলাইফ সোসাইটির সদস্য এবং বিখ্যাত ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাকটিভিস্ট বিশ্বজিৎ মহান্তি এই ঘটনায় সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বন দফতরের দিকেই। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বনদফতরকে বলা হয়েছে ঢেঙ্কানাল জেলার বেশ কিছু এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হাই ভোল্টেজ বিদ্যুতের তার। এর এই সব ইলেকট্রিক তার বন্য প্রাণীদের প্রাণহানির অন্যতম ভয়াবহ কারণ হতে পারে। কিন্তু সব কিছু জানার পরেও কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি বন দফতর। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন মহান্তি।