
এয়ার ইন্ডিয়া টাটার হাতে যাওয়ার পরে কর্মীদের মধ্যে দু’ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। একদল মনে করছেন, এয়ার ইন্ডিয়া এবার চাঙ্গা হবে। তাঁদেরও ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। আর একদল মনে করছেন, এয়ারএশিয়া এবং ভিস্তারা ঠিকমতো চালাতে পারছে না টাটা সন্স। এক দশক আগে তারা ফের উড়ানের ব্যবসায় নেমেছে। কিন্তু এখনও লাভ করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে এয়ার ইন্ডিয়া তাদের হাতে যাওয়ার পরে চাঙ্গা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম।
বিমানের কেবিন ক্রুদের মধ্যে যাঁদের বয়স বেশি, তাঁরা চাকরি যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। টাটার হাতে এয়ার ইন্ডিয়া যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে কর্মীদের স্টাফ কোয়ার্টার্স খালি করে দিতে বলা হয়েছে। অনেকেই ভাবছেন, প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা পাওয়া যাবে তো? যদিও সরকার এ ব্যাপারে কর্মীদের আশ্বাস দিয়েছে।
অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রকের সচিব রাজীব বনসল বলেছেন, যাঁরা এয়ার ইন্ডিয়া কিনছেন, তাঁরা আগামী এক বছরের মধ্যে কোনও কর্মীকে ছাঁটাই করবেন না। এক বছর পরে যদি ছাঁটাই করেন, তাহলে কর্মীদের ভিআরএস দিতে হবে। এর পাশাপাশি প্রত্যেক কর্মীকে দিতে হবে গ্রাচুইটি ও প্রভিডেন্ড ফান্ড।
বনসল জানান, এয়ার ইন্ডিয়াতে এখন ১২ হাজার ৮৫ জন কর্মী আছেন। তাঁদের মধ্যে ৮০৮৪ জন স্থায়ী কর্মী। এছাড়া চুক্তিভিত্তিক কর্মী আছেন ৪০০১ জন। এছাড়া এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসে কর্মীর সংখ্যা ১৪৩৪।
টাটা সন্স মোট ১৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার মালিক হতে চলেছে। একসময় টাটা সন্সই এয়ার ইন্ডিয়ার মালিক ছিল। ৫০ বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে। টাটা ফের এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ১০০ শতাংশ শেয়ারের মালিক হচ্ছে। একইসঙ্গে তারা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কোম্পানিরও ৫০ শতাংশ শেয়ার পাচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া কেনার জন্য টালাস প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক স্পেশাল পারপাস ভেহিকল তৈরি করেছিল টাটা সন্স। সংস্থার সচিব তুহিনকান্তি পাণ্ডে শুক্রবার জানিয়েছেন, তাঁরা এয়ার ইন্ডিয়া কেনার প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছেন।
২০২১ সালের ৩১ অগাস্ট এয়ার ইন্ডিয়ার মোট ঋণ ছিল ৬১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। তার মধ্যে ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা শোধ করবে টাটা সন্স। বাকি ৪৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা শোধ করবে এয়ার ইন্ডিয়া অ্যাসেট হোল্ডিং লিমিটেড নামে সরকারের এক স্পেশাল পারপাস ভেহিকল।