
কিন্তু এমনই সময়ে নতুন করে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বদলে ফিরে এসেছে করোনাভাইরাস। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভারতে করেনার নতুন প্রজাতি সক্রিয় হতে শুরু করে দিয়েছে। মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, কেরল, কর্নাটক, ছত্তীসগড়– এই রাজ্যগুলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। একে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় দফার সংক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়ার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
ফলে করোনা নিয়ে নতুন করে সতর্কতা প্রচার শুরু হয়েছে। রাজ্যগুলিতে করোনা পরীক্ষা আরও বাড়ানোর উপরেও নতুন করে জোর দেওয়া হচ্ছে। এ রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, কেরল, কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়ের কোনও বাসিন্দা কলকাতা বিমানবন্দরে নামলেই তাঁর পরীক্ষা করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের প্রথম দফায় লকডাউন করে অনেকটাই সামাল দেওয়া গেছিল পরিস্থিতি। সেইসঙ্গে মানুষের মনে একটা আশঙ্কা কাজ করছিল, যার জেরে সামাজিক সতর্কতাও বেশি ছিল। কিন্তু এখন যেন সব পক্ষের মধ্যেই গা-ছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে। তবে অন্য রাজ্যগুলিকে দেখে শিক্ষা না নিলে বড় খেসারত দিতে হবে এই গা-ছাড়া মনোভাবের। এখন এ রাজ্যে সুস্থতার হার অনেকটা বেশি হলেও, এখনই সচেতন না হলে আবার লকডাউন পর্বের মতোই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ফিরতে পারে রাজ্যে।
তার ওপরে ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। যে কোনও দিন তারিখ ঘোষণা হবে। রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক নেতারা প্রচার-মিছিলে ব্যস্ত। হাজার হাজার লোক সমাগম হচ্ছে নানা প্রান্তে। সতর্কতার বালাই নেই। রাজ্যের তরফেও ভোট প্রচার নিয়ে যতটা তৎপরতা ততটা নেই করোনা নিয়ে। টিকাকরণ নিয়েও বড় স্তরে সচেতনতা প্রচার নেই। এর পাশাপাশি, করোনা পরীক্ষাও কমে গেছে অনেকটাই। যেখানে গত মাসে চল্লিশ হাজার বা তার বেশি মানুষের পরীক্ষা হচ্ছিল দৈনিক, সেখানে সে সংখ্যা নেমে গেছে কুড়ি হাজারের নীচে।
এ রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৭৪ হাজার। সুস্থ হয়েছেন সাড়ে ৫ লক্ষের বেশি। করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষের। এই সংখ্যা হু হু করে বাড়তে পারে আগামী কয়েক মাসে। চিকিৎসকরা ইতিহাস ও অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন, যে কোনও মহামারীরই দ্বিতীয় ঢেউ অনেক বেশি মারাত্মক ও প্রাণঘাতী হয়। করোনার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের উদাহরণ রয়েছে চোখের সামনে। এর পরেও সাবধান না হলে বাংলা তথা ভারত যে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে, সে কথা বলাই বাহুল্য।