
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ গুরুগ্রামের আইটি হাবের কাছেই ঘটে এই ঘটনা। প্রায় ৮ কিলোমিটার তাড়া করে একটি পিক আপ ভ্যানকে আটক করে গোরক্ষক বাহিনীর কিছু যুবক। তারপরে ওই গাড়ির চালক লোকমানকে বাইরে বের করে এনে বেধড়ক মারধর শুরু করে তারা। ওই যুবকদের অভিযোগ, ভ্যানে করে গো-মাংস পাচার করছিল লোকমান। তার কথা না শুনেই চলতে থাকে মারধর।
সূত্রের খবর, এই ঘটনা শুরু হতেই সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু নীরব দর্শকের ভূমিকা নেয় তারা। ওই যুবক বারবার সাহায্যের আর্তি জানালেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেই অভিযোগ। লোকমানকে বেধড়ক মারধরের পরে সেই পিক আপ ভ্যানে করে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় গুরুগ্রামের বাদশাহপুর গ্রামে। সেখানে গিয়ে ফের মারধর শুরু করা হয় তাকে।
দ্বিতীয়বার মারধর শুরু হতে পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। তারা উত্তেজিত জনতাকে থামিয়ে লোকমানকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারপরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশের সামনে এই ঘটনা ঘটলেও এবং এই ঘটনার একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অথচ ওই ভ্যানে থাকা মাংস পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবরেটরিতে সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দিয়েছে তারা।
সূত্রের খবর, ওই পিক আপ ভ্যানের মালিক জানিয়েছেন, সেখানে গরুর নয়, মহিষের মাংস ছিল। গত ৫০ বছর ধরে এই ব্যবসায় রয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ভিডিওতে চুপচাপ পুলিশ আধিকারিকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাওয়ার ঘটনা নিয়েও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
এর আগে ২০১৫ সালে দিল্লির কাছে নয়ডার দাদরিতে এই গো-মাংস পাচারের অভিযোগে এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলে উত্তেজিত জনতা। সেই সময়েও পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার থেকে বেশি ব্যস্ত ছিল মাংসের নমুনা পরীক্ষা করতে দেওয়ায়। এদিন সেই একই ঘটনা দেখা গেল বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
গত কয়েক বছরে বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার শিকার হতে হয়েছে মুসলিমদের। বারবার বিরোধীরা অভিযোগে করেছে, ধর্মের নামে খুনের রাজনীতি করছে বিজেপি। অবশেষে ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাফ বলেন, গরুর প্রতি ভক্তি থেকে কাউকে মেরে ফেলা বরদাস্ত করা হবে না। তারপরেও যে এই ঘটনা ঘটেই চলেছে, ফের একবার তা প্রমাণিত হল।