
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, কাশ্মীর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়েছিল উপত্যকার অনেক জঙ্গিই। পরিবারের সঙ্গে মিলেমিশে সাধারণ জীবনযাপন করছিল তারা। কিন্তু এখন ফের তাদের মধ্যেও সক্রিয়তা দেখা গেছে। খবর মিলেছে, এইসব জঙ্গিদের টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সম্প্রতি আইএসআই-এর সঙ্গে হিজবুল মুজাহিদিন ও জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর কম্যান্ডারদের বৈঠক হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, কাশ্মীর থেকে ফের তরুণ জঙ্গিদের দলে টানার চেষ্টা চলছে। উপত্যকায় সন্ত্রাস তৈরি করার ছকও কষছে আইএসআই।
পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলোর মাথারা আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের বেছে ভারতে পাঠাত। উপত্যকার কম্যান্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হত। কিন্তু এখন সে রাস্তা প্রায় বন্ধ। তাই সাইবার প্রযুক্তির সুবিধার নিয়ে এই কাজ শুরু হয়েছে। একাধিক ডিজিটাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। ভুয়ো ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, গোপন লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছর অনলাইনে ডজন খানেক জঙ্গি মডিউলের পর্দা ফাঁস করা হয়েছিল।
কুড়ির ডিসেম্বরে তাওয়ার ওয়াঘে ও আমির আহমেদ মীর নামে পাক জঙ্গি সংগঠনের দুই হ্যান্ডলারকে পাকড়াও করেন গোয়েন্দা অফিসাররা। জেরায় তারা জানিয়েছিল, অনলাইনে লাগাতার জঙ্গি নিয়োগ চলছে উপত্যকায়। ফেসবুকে পাক হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে উপত্যকার জঙ্গি কম্যান্ডাররা। তাওয়ার ও আমিরকেও নিয়োগ করা হয়েছিল ফেসবুকের সূত্রেই। শুধুমাত্র ফেসবুক নয়, একাধিক ডিজিটাল মিডিয়া সাইটকে ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। যাদের কাছে তাদের নিয়োগ করা হচ্ছে, সেই হ্যান্ডলারদের গোপন কোড রয়েছে।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে ভারতে জঙ্গির স্লিপাল সেল ঢোকাতে আরও মরিয়া হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। সেনা সূত্র বলছে, লস্কর, জইশের একাধিক জঙ্গি সীমান্ত পার করার চেষ্টা করেছে। সেনার গুলিতে তারা বেশিরভাগই পিছু হটেছে। এই সব জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ রেখা পার করতে সাহায্য করছে পাকিস্তানের বেশ কিছু গ্রামবাসী।
বস্তুত ভারতীয় গোয়েন্দাদের এও দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে তালিবানের পুরনো একটি গোষ্ঠী। খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় তাদের ক্যাম্পও দেখা গেছে। পাশাপাশি জইশের নতুন শিবির হয়েছে জঙ্গল মান্ডি, শিনকিয়ারি, গারহি হাবিবুল্লাহ, ওঘি, ইলাকা-ই-ঘর, আন্ধের বেলা ইত্যাদি অঞ্চলে।