
গত বুধবার প্রাতঃভ্রমণে বেরন তিনি। তখনই পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ধানবাদে তিনি রাস্তার ধার ঘেঁষে হাঁটছেন, পিছন থেকে একটি টেম্পো গতিমুখ বদলে ছুটে এসে তাঁকে ধাক্কা মেরে চলে গেল। প্রথমে ভাবা হচ্ছিল এটা নিছক দুর্ঘটনা। কিন্তু পরে ক্রমশঃ সন্দেহের ছায়া ঘনিয়ে ওঠে। প্রাথমিক ধারণা হল, কোনও মাফিয়া চক্র প্রতিশোধ নিতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সম্প্রতি একটি মামলায় দুই গ্যাংস্টারের জামিন নাকচ করেছিলেন বিচারক আনন্দ। অনেকের সন্দেহ, সেই রাগেই বিচারকের উপর হামলা চালিয়েছে সমাজবিরোধীরা।
এদিকে আজ ঘটনাটি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বিচারক আনন্দের মৃত্যু ব্যাপারে ঝাড়খন্ডের মুখ্যসচিব ও পুলিশ প্রধানকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি কতদূর, জানিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছে। বিচারক আনন্দের মৃত্যু ঘিরে নানা প্রশ্ন, সংশয় দেখা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সব রাজ্যকে নোটিস দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, দেশব্যাপী বিচারবিভাগীয় অফিসার, আইনব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত লোকজনের ওপর হামলার ঘটনাগুলি গুরুত্ব, উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে। শুধুমাত্র আদালতের সুরক্ষা, বিচারকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারেই বিচারকের মৃত্যুটি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিল শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি বলেছে, অতিরিক্ত জেলা বিচারকের মৃত্যুর তদন্তে তদারকি করবে ঝাড়খন্ড হাইকোর্ট।
প্রয়াত বিচারকের ছোট ভাই শম্ভু সুমন দাদাকে পরিকল্পনামাফিক হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই এটা স্পষ্ট বলে তাঁর অভিমত। ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করেছেন তিনি।
প্রয়াত বিচারক আনন্দের বাবা সদানন্দ প্রসাদ, ভাই শম্ভু সুমন, উভয়েই হাজারিবাগের আইনজীবী। আনন্দকে ধাক্কা মেরে ছুটে পালিয়ে যাওয়া টেম্পোটিকে ঘটনার দিন রাতেই গিরিডি জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়। তদন্তে প্রকাশ, গত মঙ্গলবার সেটি চুরি করা হয়েছিল।
ইতিমধ্যেই আনন্দের মৃত্যুর তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ ডিরেক্টর জেনারেলের নেতৃত্বে সিট গড়া হয়েছে। ঘাতক টেম্পোর চালক, তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চালক বিচারককে ধাক্কা মারার কথা স্বীকার করেছে বলে খবর। টেম্পোটি পরীক্ষা করে দেখে শীর্ষ পুলিশ অফিসাররা। যদিও চলতি তদন্ত নিয়ে কিছু বলতে চাননি তাঁরা।