
পেগাসাস: জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে হলফনামা দিতে নারাজ কেন্দ্র, অবস্থান বদলে ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট
কিন্তু ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি তাঁকে বলেন, মিঃ মেটা, শেষবার আমরা একটা হলফনামা চেয়েছিলাম বলেই আপনাদের সময় দিয়েছিলাম, আর এখন আপনি একথা বলছেন!
আদালত অন্তর্বর্তী আদেশ ঘোষণা স্থগিত রেখে বলে, দু-তিনদিনে তা জানাবে। এও বলে, তার মধ্যে সরকার আদালতে এসে জানাতে পারে, তারা হলফনামা পেশের ব্যাপারে মতবদল করল কিনা।
বিরক্ত শীর্ষ আদালত আগেই সরকারকে মনে করিয়ে দেয়, তাদের শুধু সাধারণ ব্যক্তিদের ফোন হ্যাক করার অভিযোগ সম্পর্কেই জবাব দিতে বলা হয়েছিল। বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, শেষবারও জাতীয় সুরক্ষার প্রসঙ্গ উঠেছিল, আমরা পরিষ্কার বলেছিলাম, কেউই এমন ভাবে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে না যাতে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি হয়। আমরা বলেছিলাম, সাধারণ লোকের ফোন হ্যাক করার অভিযোগ উঠছে, তাই আপনারা হলফনামা পেশ করে জানান, এমন কোনও অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা। আমাদের মাথাব্যথার একমাত্র কারণ লোকের ফোন হ্যাকড হওয়ার অভিযোগ। কোন এজেন্সির এমন ক্ষমতা আছে এবং সেটা বৈধ কি বৈধ নয়। অনেকেই বলছেন,তাঁর গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। পাল্টা মেটা বলেন, লোকজন যদি বলে, তাদের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হচ্ছে, তবে সেটা সিরিয়াস বিষয়। আমরা তদন্ত করতে তৈরি। বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করব। কিন্তু শীর্ষ আদালত তাতে সম্ভবতঃ খুশি না হয়ে বলে, কমিটি তৈরি করাটা ইস্যু নয়। হলফনামার উদ্দেশ্য আমাদের এটা জানা, আপনাদের কী অবস্থান। আপনাদের তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রীই সংসদে বলেছেন, ফোনের টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ না করে বলা যায় না, সেটি হ্যাক করা হয়েছে কি, হয়নি। আমরা সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা (সরকার) হলফনামা দিতে চায় না।
দুই পিটিশনার সাংবাদিক এন রাম ও এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়ার হয়ে আইনজীবী কপিল সিবাল ব্যক্তি মানুষের গোপনীয়তার ব্যাপারে জোর দেন, বলেন, পেগাসাস ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, সেটাই জানতে চাই আমরা। আমরাও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হোক, চাই না। কিন্তু পেগাসাস ব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের নিশানা করা হয়ে থাকলে বিষয়টি খুবই মারাত্মক। ২০১৯ থেকে (যখন হোয়াটসঅ্যাপ এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করে) কিছুই করা হয়নি। জার্মান পুলিশ পেগাসাস কিনেছে, ব্যবহার করেছে, এহেন রিপোর্টের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কেন ভারত সরকার স্বীকার করতে পারছে না যে, পেগাসাস ব্যবহার করা হয়েছে? কেন সরকারকে নিজের কমিটি গড়ার অনুমতি দেওয়া হবে?
গত মাসে আদালত নোটিস দিয়ে হলফনামা পেশ করতে বলেছিল, তবে জানিয়েছিল, তারাও চায় না, সরকার এমন কিছু পেশ করুক যাতে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। সরকারের তরফে সীমিত হলফনামা দিয়ে দাবি করে হয়, ফোন হ্যাক করার অভিযোগের পিটিশনগুলি নেহাত অনুমান, জল্পনা, মিডিয়ার অপরীক্ষিত বা অসম্পূর্ণ নথির ওপর দাঁড়ানো।