
শনিবার আবু ধাবিতে গালফ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, “আমরা বুঝতেই পারছি না, কেন ভারত সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল। এর কোনও দরকার ছিল না।” নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরে পরেই বাংলাদেশের তিন মন্ত্রী ভারত সফর বাতিল করেছিলেন।
এই সিদ্ধান্তের পরে ভারত থেকে কোনও মুসলিম ব্যক্তি বাংলাদেশে যাননি বলেই জানিয়েছেন হাসিনা। তিনি বলেন, “না, ভারত থেকে কোনও মুসলিম বাংলাদেশে ফিরে আসেননি। কিন্তু ভারতের মধ্যেই অনেকে অনেক সমস্যার মুখে পড়ছেন।” ভারতের তরফে অবশ্য হাসিনার এই মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০.৭ শতাংশ হিন্দু। নাগরিকত্ব আইনের পর থেকেই চিন্তা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা। তাঁদের চিন্তা, ভারতে বসবাসকারী যেসব মুসলিমরা নিজেদের নাগরিকত্ব দেখাতে পারবেন না, তাঁরা বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। আর তাই এই ঘটনা রুখতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে কড়া পাহারা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গালফ নিউজকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে হাসিনা অবশ্য নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেই মন্তব্য করেছেন। হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় বলে এসেছে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকারের তরফেও বলা হয়েছে এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে আমার দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, এনআরসিতে বাংলাদেশের কোনও সমস্যা হবে না।” হাসিনা আরও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। তিনি মোদী সরকারের সমালোচনা করছেন না। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বুঝতে তাঁর সমস্যা হচ্ছে।
হাসিনার এই মন্তব্যের পরে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার একটা বড় প্রভাব পড়েছে। তারমধ্যে এই এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন হওয়ার পর ভারত থেকে অনেক মুসলিম বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যতই হাসিনা সেই কথা মানতে না চান, সম্প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের হাতে অনেকেই ধরা পড়েছেন যাঁরা ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছিলেন। ক্রমাগত হাসিনার উপর চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরা। তাই এই পরিস্থিতিতে আর যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর চাপ না বাড়ে তার চেষ্টা চালাচ্ছেন হাসিনা।