
শাহিনবাগ নিয়ে মোদীকে প্রশ্ন সৌগতর, বাংলার সন্ত্রাসের কথা তুলে চুপ করাতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
সৌগত রায় প্রশ্ন করেন, তা হলে শাহিনবাগে গুলি চালানোর কথা যারা বলছে... তা ঠিক? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দাদা দাদা পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসার কথা বলব নাকি!" প্রধানমন্ত্রীর এ কথার পর এই প্রসঙ্গে সৌগতবাবুকে আর তর্ক বাড়াতে দেখা যায়নি।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলায় রাজনৈতিক সন্ত্রাস নিয়ে এর আগেও সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই আক্রমণের মাত্রা যেন এক দাগ চড়িয়ে দিলেন তিনি। সৌগত রায় সহ তৃণমূলের সাংসদদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “বাংলায় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত ও পীড়িতরা এখানে বসে রয়েছেন। তাঁরা যদি আপনাদের কাণ্ড কারখানার কথা বলতে শুরু করেন, তা হলে অস্বস্তির অন্ত থাকবে না কিন্তু। কী ভাবে নিরীহ লোকেদের ধরে ধরে মারা হচ্ছে সবাই জানে”।
বাজেট অধিবেশনে সংসদের যৌথ সভায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বক্তৃতার ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর গত দু’দিন ধরে বিতর্ক হয়েছে লোকসভায়। এদিন তার জবাবি বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির আর্জিও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা শুনছেন না। হিংসায় উস্কানি দিচ্ছেন। তাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যখন একথা বলছিলেন, তখন বিরোধী বেঞ্চে বসে খোঁচা দেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি প্রশ্ন করেন, তা হলে শাহিনবাগে গুলি চালানোর কথা যারা বলছে… তা ঠিক?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দাদা দাদা পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসার কথা বলব নাকি!” প্রধানমন্ত্রীর এ কথার পর এই প্রসঙ্গে সৌগতবাবুকে আর তর্ক বাড়াতে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন পিঠে ডাণ্ডা খাওয়ার ক্ষমতা বাড়াচ্ছি, রাহুলকে জবাব মোদীর
শুধু হিংসার ঘটনা নয়, সংবিধান বাঁচানোর নামে যে আন্দোলন দেশজুড়ে চলছে এবং কংগ্রেস সহ যাঁরা সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদেরও এদিন খোঁচা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কংগ্রেস যে সংবিধান বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও করে চিৎকার করছে—তা দেখে ভাল লাগছে। কারণ, যাঁদের কারণে সংবিধান বারবার আক্রান্ত হয়েছে, দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে, বিচার ব্যবস্থা বিপন্ন হয়েছে—তাঁরা সংবিধানের নাম জপলে বুঝতে হবে ওঁরা অনুতাপ করছেন। ওঁরা বুঝতে পারছেন, সংবিধানের অবমাননা করে মহা পাপ করেছিলেন।”
মোদীর এদিনের আক্রমণের সূত্র ধরে বিজেপি সাংসদরা সংসদের বাইরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো ঠিক কথাই বলেছেন। সংবিধান বাঁচানোর নামে বাংলায় এখন আন্দোলন করছে তৃণমূল ও বামেরা। অথচ অতীতে বামেরা আর এখন তৃণমূলই বাংলায় বারবার সংবিধানের শর্ত লঙ্ঘন করেছে। নিরীহ মানুষকে মেরেছে। পঞ্চায়েতে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। বিরোধীদের জেলে পুড়ে দিয়েছে। একের পর এক পুরসভা ও জেলা পরিষদ গায়ের জোরে কেড়ে নিয়েছে। সে জন্য কখনও পুলিশকে ব্যবহার করেছে, কখনও প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে, মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে, টাকা দিয়ে লুব্ধ করেছে—এঁদের মুখে সংবিধান বাঁচানোর কথা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য!