
কোভিড টেস্ট ও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে ধরা পড়েছিল মহারাষ্ট্রের কয়েকটি জেলা যেমন, অমরাবতী, আকোলা, যবৎমলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার ওই নতুন স্ট্রেন। এখন দেখা যাচ্ছে, মহারাষ্ট্রের বেশিরভাগ জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি। পাশাপাশি, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড় ও পাঞ্জাবেও নয়া স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে। এইমস প্রধান গুলেরিয়া বলছেন, মানুষের শরীরে এই নতুন স্ট্রেনের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, নয়া স্ট্রেনের জিনোম সিকুয়েন্স বা জিনের বিন্যাস বের করে দেখা গিয়েছে, এটি পুনঃসংক্রমণ বা রিইনফেকশনও ঘটাতে পারে। অর্থাৎ শরীরে একবার এই স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়ানোর পরে বারে বারে তার ফিরে আসার সম্ভাবনা থেকে যায়।
করোনার ওই নতুন স্ট্রেনের মিউটেশন বা জিনগত পরিবর্তনও শুরু হয়ে গেছে বলে আশঙ্কা করছেন গুলেরিয়া। তবে কী ধরনের মিউটেশন হচ্ছে তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি। ডক্টর গুলেরিয়া বলছেন, ভাইরাল স্ট্রেনের জিনগত বিন্যাস যদি বদলে যায় বা জেনেটিক মিউটেশন শুরু হয়, তাহলে সেই স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই চিন্তা আরও বেড়েছে। আরও একটা বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে এই নতুন স্ট্রেনের। যতজনের শরীরে করোনার এই নয়া প্রজাতির খোঁজ মিলেছে, তাঁদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ এই স্ট্রেনের সংক্রমণে প্রথম নিউমোনিয়ার উপসর্গই দেখা যাচ্ছে রোগীর শরীরে।
এইমস প্রধান বলছেন, করোনা সারিয়ে ওঠার পরে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে তার ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এই নয়া স্ট্রেন। বিশ্বজুড়ে ডজনখানেক রিইনফেকশনের ঘটনা সামনে এসেছে। এর পিছনে অনেক কারণও হয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। যেমন, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। করোনা সারালেও অ্যান্টিবডি রোগীর শরীরে বেশিদিন স্থায়ী হচ্ছে না। ভাইরাসের প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি থাকছে মাত্র তিন মাস। তার পরেই এক ধাক্কায় অ্যান্টিবডির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এখন কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডির স্থায়িত্বকাল বাড়তে দেখা গেলেও ভাইরাসের নয়া প্রজাতিতে যে ধরনের বদল হচ্ছে তাতে ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ছে। জিনের গঠন বদলে মানুষের শরীরে ঢোকা ও টিকে থাকার কৌশল শিখে ফেলেছে এই ভাইরাস। তাই একবার সংক্রমণের পরেও রোগীর ফের সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।