
সেকেন্দ্রেবাদে কলেজ অব ডিফেন্স ম্যানেজমেন্টের ওয়েইবিনারে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বলেন, কুড়ি সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যে চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তা বিশ্বের আর কোনও বাহিনী ভাবতেই পারবে না। একদিকে করোনা মহামারী, অন্যদিকে পাক সীমান্তে ক্রমাগত সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন, আবার তারই মধ্যে পূর্ব লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা। এখন ভুটান, নেপাল ও সিকিম সীমান্তেও তৎপর চিনা বাহিনী, কাজেই সেদিকেও শক্তি বাড়াতে হচ্ছে ভারতীয় সেনাকে।
চিন ও পাকিস্তানই এখন ভারতীয় বাহিনীকে সবদিক থেকে চাপে রাখার চেষ্টা করবে, বক্তব্য বিপিন রাওয়াতের। তাঁর কথায়, ভারত মহাসাগর এখন বেজিংয়ের কাছে পাখির চোখ। ভারত আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে চারশক্তির অক্ষ তথা ‘কোয়াড’ তৈরি করার পরেই ঘুম উড়েছে চিনের। যে কোনওভাবে ভারত মহাসাগরে নিজেদের আধিপত্যা বাড়াতে মরিয়া চিন। তারজন্য যে কোনও সীমা তারা অতিক্রম করতে পারে।
বিপিন রাওয়াত বলছেন, ভারত মহাসাগর ক্রমশ রণকৌশলের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আগামী দিনে সেখানে সামরিক ঘাঁটি বানানোর জন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে জোর প্রতিযোগিতা শুরু হবে। ভারত প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছে। গালওয়ান সীমান্ত সংঘাতের আগেই ভারত মহাসাগরে ক্ষেপণান্ত্র প্রতিরোধী চিনা যুদ্ধজাহাজের আনাগোনা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারত মহাসাগরে বিশেষ ব্যবসায়িক এলাকা (এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন) ও আঞ্চলিক জলসীমার কাছাকাছি কয়েকটি চিনা জাহাজকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল।
ভারত মহাসাগরে আন্দামান সীমান্তের খুব কাছে এত ঘন ঘন চিনা নৌবাহিনী জাহাজ দেখে চিন্তিত নয়াদিল্লি। ভারতীয় নৌসেনা সূত্র জানাচ্ছে, চিনা জাহাজগুলি সর্বক্ষণ নজরদারি চালাচ্ছে। চিন আগে কখনও নিজেদের জলসীমার বাইরে যুদ্ধজাহাজ বা নজরদারি জাহাজ খুব একটা পাঠাত না। কিন্তু, ২০০৮ সালে এডেন উপসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের উপদ্রব বাড়লে চিনের নৌবাহিনীও ওই এলাকায় যাতায়াত শুরু করে। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে ইদানীং, চিনের জিয়াং ইয়াং হং নজরদারি জাহাজগুলি ভারত মহাসাগরের পূর্ব দিকে টহল দিচ্ছে। গত দুবছর ধরে জিয়াং ইয়াং হং ০১,০২,০৩,০৬ ও ১৯ জাহাজগুলি ভারত মহাসাগরে মোতায়েন করা আছে।
ভারত মহাসাগরে চিনের ওপর নজর রাখতে এখন পি-৮আই বিমান নামিয়েছে ভারত। উপকূল এলাকায় নজরদারি, শত্রুপক্ষের জাহাজ এবং সাবমেরিনের অবস্থান জানা এবং প্রয়োজনে আঘাত হানার ক্ষেত্রে এই বিমান ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্যতম বড় অস্ত্র।