
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শনিবার তিন ঘণ্টা ব্যাপী ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি পালন করেছেন কৃষকরা। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে জাতীয় ও রাজ্য সড়ক অবরোধ করে পালন হয়েছে এই কর্মসূচি। যদিও দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডকে আগেই এই কর্মসূচি থেকে বাদ রেখেছিল কৃষক সংগঠনগুলি। তারপরেও শনিবার সারাদিন বাড়তি সুরক্ষা মোতায়েন করা হল দিল্লিতে। এমনকি চাক্কা জ্যাম শেষ হওয়ার পরেও নিরাপত্তার চাদরে মোড়া রাজধানী। কোনও রকমের ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন।
শনিবার সকাল থেকে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানায় কুণ্ডলী থেকে পালওয়াল যাওয়ার সড়ক অবরোধ করেন কৃষকরা। কাশ্মীরেও পাঠানকোট-জম্মু সড়ক অবরোধ করা হয়। চাক্কাজ্যামের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং দিল্লিকে। এর কারণ হিসেবে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত জানান, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের কৃষকদের এই মুহূর্তে দিল্লি নিয়ে আসে সম্ভব নয়। তাঁদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করতে হবে। তবে পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, জম্মু ও কাশ্মীর, মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্যে চাক্কা জ্যাম পালিত হয়েছে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লিতে ট্র্যাক্টর র্যালি উপলক্ষ্যে যে সংঘর্ষ ও হিংসা হয়েছিল তা যাতে না হয়, তার জন্য আগে থেকেই তৈরি ছিল প্রশাসন। ৫০ হাজার পুলিশ, আধা সামরিক বাহিনী নামিয়ে রাজধানী দিল্লিকে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয় চাক্কা জ্যামের আগে। এর পরে দিল্লির শহিদ পার্কে কৃষকদের সমর্থনে সাধারণ মানুষ জড়ো হলে তাও ভেঙে দেয় পুলিশ। অনেক জনকে আটকও করা হয়। এমনকি আইটিও এবং লালকেল্লা সংলগ্ন এলাকায় আগে থেকে মোতায়েন রাখা হয় জলকামানও। বন্ধ রাখা হয় মেট্রোও। এমনকি বেঙ্গালুরুতেও ৩০ জনকে আটক করে পুলিশ।
এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে রাকেশ টিকায়েত বিবৃতি দেন, ‘‘দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরব না আমরা। আইন প্রত্যাহার করতে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছি কেন্দ্রীয় সরকারকে। তার পর পরবর্তী পরিকল্পনা করব। চাপ সৃষ্টি করে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসানো যাবে না আমাদের।’’
কেন্দ্রের পাশ করা তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করার দাবিতে কৃষকদের এই আন্দোলন ৭৩ দিনে পড়ল। কয়েক দিন আগে কেন্দ্রের তরফে ১৮ মাসের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তাতে রাজি হননি কৃষকরা। বারবারই বলেছেন একটাই কথা, আইন প্রত্যাহার করা ছাড়া অন্য কোনও রকম আপসে রাজি নন তাঁরা। সেই দাবি থেকে নড়তে নারাজ কৃষকরা।