
সংক্রমণের হার এত দ্রুত বাড়ছে যে সব হিসেবনিকেশই তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। পজিটিভিটি রেট বেশি, করোনায় ‘আর-নম্বর’ (এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নম্বর)বেড়েছে। উদ্বেগের শেষ এখানেই নয়। ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও এক লাখ কোভিড অ্যাকটিভ রোগীকে শণাক্ত করা গেছে, সব মিলিয়ে দেশে এখন ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ। অ্যাকটিভ কেসের হারও ১২ শতাংশের বেশি যা চিন্তার কারণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা এভাবে বাড়তে থাকলে সংক্রমণের হার আরও বাড়বে। বেশিজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে সংক্রমণ।
সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির ডিরেক্টর ডক্টর রাকেশ মিশ্র বলেছেন, করোনা সংক্রমণের নিরিখে আমেরিকার পরেই ভারত। আমেরিকায় যেমন প্রতিদিন লাখের বেশি সংক্রমণ ধরা পড়ছিল, এখন ভারতের অবস্থাও তেমনই। আগামী তিন সপ্তাহ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি। ডক্টর রাকেশের বক্তব্য, আগামী তিন সপ্তাহ খুব কড়াভাবে কোভিড বিধি না মানলে সংক্রমণের হার সব সীমা ছাড়িয়ে যাবে। আক্রান্তের সংখ্যা এত দ্রুত ও বিপুল হারে বাড়তে থাকবে যে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে দেশে। আর এই তৃতীয় ধাক্কা মোটেও সুখকর হবে না। বহু মানুষের মৃত্যু হবে সংক্রমণে। তাই এই কটা দিন কোভিড গাইডলাইন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা দরকার প্রত্যেকের।
মহারাষ্ট্রে আজও দৈনিক সংক্রমণ ৬৮ হাজার ছাড়িয়েছে, দিল্লিতে নতুন সংক্রমণ ২৫ হাজার। কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ুর করোনা পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে সেই সঙ্গে হাসপাতাল—নার্সিংহোমগুলিতে কোভিড বেড কমছে। একই বিছানায় ঠাসাঠাসি করে থাকতে দেখা গেছে কোভিড রোগীদের। ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সাপোর্টের যোগান কম, বেশিরভাগ রাজ্যেই স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বিপর্যয়ের মুখে। এমনকি মর্গেও জায়গা কম। শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের লম্বা লাইন দেখা গেছে, কবরগুলোতে জায়গার অভাব। ছত্তীসগড়ে ময়লা ফেলার গাড়িতে চাপিয়ে করোনা রোগীদের দেহ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। অতিমহামারীর এমন ভয়ানক ছবি এর আগে কখনও দেখা যায়নি দেশে।