
আবেগ-প্রেম নেই স্বামীর, শুধু স্ত্রীর আয়েই নজর! ডিভোর্সে সম্মতি কোর্টের
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্ত্রীর (wife) প্রতি স্বামী (husband) মানসিক নিষ্ঠুর (cruelty) আচরণ করেন, এহেন কারণকে মান্যতা দিয়ে এক দম্পতিকে ডিভোর্স (divorce) মঞ্জুর করল দিল্লি হাইকোর্ট( delhi high court)। বিচারপতি বিপিন সঙ্ঘীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্বামীর আবেগহীন মানসিকতা, কেবলমাত্র স্ত্রীর অর্জিত আয়ের ব্যাপারেই আগ্রহকে তিরস্কার করেছে। বলেছে, স্ত্রী দিল্লি পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর থেকে তাঁকে শুধু টাকা এনে দেওয়ার যন্ত্র (cash cow) হিসাবেই দেখতেন স্বামী। স্বামীর এমন দৃষ্টিভঙ্গি স্ত্রীর মানসিক যন্ত্রণা, কষ্টের কারণ হয়ে ওঠে, যা নির্যাতনের সমান। বেঞ্চের আরেক সদস্য বিচারপতি জশমীত সিং।
বেঞ্চের অভিমত, সাধারণতঃ দেখা যায়, প্রতিটি বিবাহিত মহিলার সংসার করার বাসনা থাকে। কিন্তু বর্তমান ক্ষেত্রে স্বামী ভদ্রলোকের দাম্পত্যকে সমৃদ্ধ করার ইচ্ছা নেই, শুধুমাত্র স্ত্রীর রোজগারেই তাঁর নজর।
স্বামী বেকার, মাতাল, শারীরিক নির্যাতন করেন, টাকা আনতে বলেন বলে অভিযোগ করে স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিবার আদালত তাঁর আবেদন নাকচ করে। হাইকোর্ট পরিবার আদালতের রায় খারিজ করে হিন্দু বিবাহ আইনে দুপক্ষের বিয়ে ভেঙে দেয়।
এক্ষেত্রে স্বামী, স্ত্রী দুজনেই গরিব পরিবারের। তাদের বিয়ের সময় স্বামীর বয়স ছিল ১৯, স্ত্রীর ১৩ বছর। ২০০৫ সালের পরও ২০১৪ র নভেম্বর পর্যন্ত স্ত্রীর স্বামীর বাড়িতে ঠাঁই হয়নি। স্ত্রী দিল্লি পুলিশের চাকরি পাওয়ার পরই তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে গ্রহণ করা হয়।
হাইকোর্ট বলেছে, আবেদনকারী (স্ত্রী) প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও ওই দম্পতির মধ্যে ব্যবধান ক্রমশঃ বেড়েই চলে। নিজে বেকার হওয়ায় স্বামী স্ত্রীর আয় পকেটস্থ করতে তাঁকে হেনস্থা করতে থাকেন। এতে স্ত্রী মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকেন।
স্বামী বিয়ে ভেঙে দেওয়ার আবেদনের বিরোধিতা করেন এই যুক্তি দেখিয়ে যে তিনি স্ত্রীর পড়াশোনার খরচ বহন করেছেন, যার জন্য সে চাকরি পেয়েছে। যদিও স্ত্রী এই দাবি নাকচ করেন।
আদালত বলেছে, ২০১৪ পর্যন্ত স্ত্রী নিজের বাপের বাড়িতেই ছিলেন, তাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে তাঁর ভরণপোষণের খরচ তারাই করেছে। বেঞ্চ এও বলেছে, স্বামীর সঙ্গে কথা বলে আমাদের কাছে এটা পরিষ্কার যে, তিনি দাম্পত্য টিকিয়ে রাখতে চাইছেন একটিই কারণে, তা হল স্ত্রীর দিল্লি পুলিশের চাকরিটা। তিনি স্ত্রীর পড়াশোনার জন্য খরচ করেছেন, এই দাবি করার অর্থ তিনি ওটাকে বিনিয়োগ মনে করছেন, যা ডিভোর্স হলে সফল হবে না।