
হিংসায় উস্কানি? ত্রিপুরায় শতাধিক সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে কেন ইউএপিএ?
পুলিশ নোটিসে বলেছে, কিছু লোক, সংগঠন ট্যুইটারে রাজ্যে মসজিদে হামলা, সাম্প্রতিক সংঘর্ষ নিয়ে অন্য ঘটনার বিকৃত, আপত্তিকর খবর, বিবৃতি , মিথ্যে ছবি, ভিডিও ছড়াচ্ছে যার উদ্দেশ্য ফৌজদারি চক্রান্ত বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের মধ্য়ে বিভেদ তৈরি করা। ওই সোস্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলারদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ, ১৫৩ বি, ৪৬৯, ৪৭১, ৫০৩, ৫০৪, ১২০ বি ও ইউএপিএ-র ১৩ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে ১৫০টি সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখার জন্য তালিকায় রাখা হয়। সেগুলির কনটেন্ট ভাল করে পরীক্ষার পর ১০১টিকে চিহ্নিত করা হয়, যেগুলি থেকে কুত্সামূলক প্রচার চালানো হয়েছিল, যার জেরে ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়াতে পারত।
জনৈক পদস্থ পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, সমাজ মাধ্যমে ছড়ানো সাম্প্রদায়িক প্রোপাগান্ডার সঙ্গে চার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর সাম্প্রতিক ত্রিপুরা সফরের যোগ পাওয়া গিয়েছে। চার আইনজীবীর নিরপেক্ষ তথ্যানুসন্ধানী দলটি লইয়ার্স ফর ডেমোক্র্যাসির ব্যানারে রাজ্য ঘুরে এসে সাংবাদিক সম্মেলনে জানায়, কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সংখ্যালঘু এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে, মসজিদে হামলা করেছে, মুসলিমদের দোকান, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। দলটি গত মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে। পুলিশের দাবি, সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়াতে সাংবাদিক বৈঠককে ব্যবহার করা হয়। পুরো বিষয়টি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় বলা হয়, ধর্ষণ হয়েছে, উসকানিমূলক কথাবার্তা বলা হয়।
পুলিশ বলেছে, নোটিস পাঠানো মানে এই নয়, এখনই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। তাদের তলব করে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। তারা আদালতে চ্যালেঞ্জও করতে পারে।
কিন্তু কেন ইউএপিএর মতো কঠোর আইন? পুলিশের সাফাই, যে-ই বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, প্রোপাগান্ডা চালানোর চেষ্টা করুক, সেটা বেআইনি কার্যকলাপ। ইউএপিএ-র ১৩ ধারা তুলনামূলকভাবে নরম কেননা তাতে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাবাস হয়।
এদিকে ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য্যের দাবি, পুলিশি পদক্ষেপে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদৌ খর্ব হয়নি। পুলিশকে তো তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে তদন্ত করতেই হবে। অভিযুক্তরা এমন কাজে যুক্ত প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেই হবে। গণতান্ত্রিক দেশে বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আবশ্যিক, কিন্তু সীমাহীন নয়।
ত্রিপুরা কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহার মত, ত্রিপুরা যাওয়া আইনজীবীদের এভাবে অভিযুক্ত করা সঠিক নয়। তাঁরা এখানে দাঙ্গা বাঁধাতে আসেননি। এমন আইন প্রয়োগ করা ঠিক নয়। সত্যিই সাম্প্রদায়িক প্রচার হয়ে থাকলে সরকার ব্যবস্থা নিতেই পারে। এটা আইনের অপব্যবহার।