
মধ্যপ্রদেশের সতনায় লকডাউন ভাঙলে চার পৃষ্ঠা রামের নাম লিখতে হচ্ছে, উদ্যোগী এসআই
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লকডাউনে ঘরের ভিতরে থাকার কথা, বাইরে নয়। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরতে বারণ করছে পুলিশ, প্রশাসন। বাজারহাটের নির্ধারিত সময় মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছে করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ কমবেশি দেশের সব রাজ্যে আছড়ে পড়ায়। কিন্তু কে শোনে কার কথা! একাধিক শহরে বিনা প্রয়োজনেই রাস্তায় নেমে পড়ছে লোকজন।তাদের সামলাতে অভিনব কৌশল বের করতে হচ্ছে পুলিশকে। কোথাও কোথাও আটক করে বুঝিয়ে লোকজনকে ঘরে ফেরাচ্ছে পুলিশ, কোথাও কান ধরে ওঠবোস করিয়ে বা প্রকাশ্যে রাস্তায় ডন বৈঠক করতে বলে সাবধান করে ছেড়ে দিচ্ছে। দিনকয়েক আগে চারটি মেয়েকে লকডাউন ভাঙায় রাস্তায় ওঠবোস করতে বাধ্য করায় মধ্যপ্রদেশ পুলিশের তীব্র সমালোচনা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রদেশের সতনা জেলার পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর সন্তোষ সিং লকডাউনের বিধি ভঙ্গকারীদের শাস্তি দিচ্ছেন চার পৃষ্ঠা ভগবান রামের নাম লিখিয়ে। স্থানীয় একটি সংগঠন থেকে ডোনেশন হিসাবে প্রচুর পুস্তিকা পাওয়ার পর এই অভিনব বুদ্ধি খেলে যায় তাঁর মাথায়। সংবাদ সংস্থাকে তিনি একথা জানিয়েছেন। লকডাউন বিধি ভাঙলে তাঁর সামনে ৩০-৪৫ মিনিট ধরে রামের নাম লিখতে হচ্ছে পুস্তিকার পৃষ্ঠার ওপর। যদিও এসআই নিজের পকেট থেকে পয়সা দিয়ে রামের ছবি বসানো, নাম লেখা প্রচুর নোটবুক কিনেছেন বলে একটি সূত্রের দাবি।
সন্তোষ বলেছেন, আগে লকডাউন ভেঙে বেরলে দোষীদের ধরে ওঠবোস করিয়ে বা টানা ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা রাস্তায় বসিয়ে রেখে ছেড়ে দেওয়া হোত। এখন তার বদলে ছেড়ে দেওয়ার আগে তাদের যতক্ষণ সম্ভব, রামের নাম লিখতে হচ্ছে। তবে সিন্ধি ক্যাম্প বাবা দয়াল দাশ চকে নিযুক্ত এস আই একইসঙ্গে সুনিশ্চিত করছেন যাতে রাম ধর্মীয় চরিত্র হওয়ার ফলে বিধি ভাঙা লোকজনের ধর্মীয় আবেগ কোনওভাবে ক্ষুন্ন না হয়। কাউকেই রামের নাম লিখতে জোর করা হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, তিনদিন ধরে এটা চলছে। প্রায় ২৫ জনকে এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে এপর্যন্ত, কোনও অভিযোগ, অনুযোগ পাইনি।
তবে সতনার পুলিশ সুপার ধরমবীর সিং লকডাউন ভাঙার শাস্তি হিসাবে রাম নাম লিখতে বলার শাস্তির পক্ষপাতী নন। সংশ্লিষ্ট এসআই ব্যক্তিগত উদ্যোগে এমন নিয়ম চালু করেছেন, এর কোনও আইনি বা পেশাগত বৈধতা নেই।
এদিকে মধ্যপ্রদেশে ৭১০৬ টি নতুন করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে। রাজ্য মোট সংক্রমণ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৩১ হাজার ৩৮৫। রবিবার ৭৯ জনের মৃত্যু ধরলে রাজ্য মোট মারা গিয়েছেন ৬৯৯২ জন।
রাজ্যের বেশিরভাগ জেলাতেই লকডাউন বহাল থাকছে ২৪ মে পর্যন্ত। ভোপালেও বিধিনিষেধের মেয়াদ ১৬ মে এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে। গত ১২ এপ্রিল থেকে দফায় দফায় কার্ফু বেড়েছে রাজ্যে।