Latest News

‘ঐতিহাসিক অবতরণ’, রণতরী বিক্রান্তে আড়াই সেকেন্ডে ‘অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং’ করল তেজস

দ্য ওয়াল ব্যুরো: বড় সাফল্য বললেও কম বলা হয়। ভারতের গর্বের রণতরী এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার আইএনএস বিক্রান্তে (INS Vikrant) সফলভাবে ‘অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং’ করল যুদ্ধবিমান তেজস (Tejas Jet)। প্রতি ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বেগের যুদ্ধবিমানটিকে তার গতি কমিয়ে জিরোতে নিয়ে আসতে সময় লেগেছে মাত্র আড়াই সেকেন্ড। যে কোনও রণতরীর ডেকে অবতরণ করা সহজ ব্যাপার নয়। সীমিত পরিসরে কমসময়ের মধ্য়ে গতি কমিয়ে অবতরণ করতে গেলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর যেখানে রণতরী আর যুদ্ধবিমান দুইই শক্তিশালী।

ভারতীয় নৌসেনা বলছে ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’ তৈরি করেছে আইএনএস বিক্রান্ত ও লাইট কমব্যাট ফাইটার জেটে তেজসের নৌ সংস্করণ এলসিএ নেভি। আইএনএস বিক্রান্তের মতো রণতরীর ডেকে সফলভাবে অবতরণ করার যোগ্যতা অর্জন করল যুদ্ধবিমান তেজস। আন্তনির্ভর ভারতের দিকে আরও এক কদম এগনো গেল বলেই মনে করছেন নৌসেনার কম্যান্ডাররা।

রণতরীর ডেকে তেজসের অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং নৌসেনার শক্তি আরও বাড়াবে

কম্যান্ডার জয়দীপ মাওলাঙ্কার (অবসরপ্রাপ্ত)বলছেন, রণতরীর ডেকের দৈর্ঘ্যছিল ৯০ মিটার। তার থেকে এক ইঞ্চিও বেশি নয়। এই পরিসরেই তীব্র গতির তেজসকে অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং করতে হলে খুব কম সময়ের মধ্য়ে গতি কমাতে হত। সেখানে ২৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগ থেকে শূন্যতে নামিয়ে আনতে মাত্র আড়াই সেকেন্ড সময় লেগেছে। একবারে মাপে মাপে রণতরীর ডেকে সঠিকভাবে ও নিরাপদেই অবতরণ করেছে যুদ্ধবিমান।

দেখুন ভিডিও

নৌবাহিনীর অফিসাররা বলছেন, ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে বানানো তেজস যুদ্ধবিমানের ন্যাভাল ভার্সনকে এই রণতরীর ডেকে অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং করানোর জন্য অনেকদিন থেকেই চেষ্টা চলছিল। সেই মিশন সফল হল। এই অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং ছিল পরীক্ষামূলক। এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে এই লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্টকে আইএনএস বিক্রান্তের ডেকে ল্যান্ড করনো হবে। আর তা সফল হলে ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি যে বেশ কয়েক গুণ বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতের আগে আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স নিজেদের যুদ্ধজাহাজের ডেকে যুদ্ধবিমান ল্যান্ড করাতে সক্ষম ছিল। চিনও এই কৌশল আয়ত্ত করেছে।

জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে পাকিস্তান যতই গর্ব করুক না কেন, সেই গর্ব চুরমার করতে তেজস যুদ্ধবিমানকে আরও শক্তিশালী করছে ভারত।  লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট তেজসের নতুন ভ্যারিয়ান্ট তৈরির গবেষণা চালাচ্ছে অ্যারোনটিক্যাল ডিজাইন এজেন্সি (ADA) এবং হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হ্যাল) । প্রাথমিক নকশাও তৈরি। ডিআরডিও জানিয়েছে, তেজস এলসিএ রণতরীর ডেকে সফলভাবে অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং করার পরে এর ‘টুইন ডেক বেসড ফাইটার (TEDBF)’ জেট বানানোর কাজ আরও সহজ হবে।

৩০টি যুদ্ধবিমান ওঠানামা করতে পারবে আইএনএস বিক্রান্তে (INS Vikrant)

কোচির শিপইয়ার্ডে তৈরি করা হয়েছে এই রণতরী। ওজন প্রায় ৪০ হাজার টন। এটি বিমানবাহী রণতরী (INS Vikrant) ‘বিক্রান্ত’ ক্লাসের প্রথম যুদ্ধজাহাজ। বিক্রান্ত কথার অর্থ হল সাহসী বা পরাক্রমী। ২৬২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৬০ মিটার প্রস্থের এই বিমানবাহী রণতরীর (INS Vikrant) ডেকে মিগ-২৯ এর মতো যুদ্ধবিমান ওঠানামা করতে পারবে।

INS Vikrant: All you need to know about largest India-made warship | Latest  News India - Hindustan Times

১৪টি ডেক রয়েছে এই জাহাজের (INS Vikrant)। ২৩০০টি কামরা। জাহাজের নাবিক-সহ মোট ১৭০০ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। মহিলা অফিসারদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৮ নট (প্রায় ৫২ কিলোমিটার)। রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৯০ মিটারেরও বেশি। ফলে তেজসের মতো আধুনিক যুদ্ধবিমানও ওঠানামা করতে পারবে এই বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকে। এক সঙ্গে ৩০টি যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টার ওঠানামা করতে পারবে বিক্রান্ত থেকে। মিগ ২৯ ওঠানামা করার প্রযুক্তি আছে এই যুদ্ধজাহাজে।

You might also like