
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোভিড সংক্রমণ বিধ্বংসী চেহারা নিচ্ছে কেরলে (Kerala Covid)। সংক্রমণের গতি রোখা যাচ্ছে না কিছুতেই। দৈনিক আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। কেরলে করোনা সংক্রমণের হার দেশের অন্যান্য রাজ্যের থেকে অনেকটাই বেশি। দিনে দিনে আরও বাড়ছে। মৃত্যুহারও দেশের মধ্যে সর্বাধিক। সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। কেন কেরলে করোনা বাড়ছে তার সম্ভাব্য কিছু কারণ বলেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
করোনা রোধে এক সময় কেরলই পথ দেখিয়েছিল। করোনার প্রথম ঢেউ সামাল দিয়ে গোটা দেশের সামনে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছিল ‘কেরল মডেল’। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, মহারাষ্ট্রের মতোই সংক্রমণ বেড়ে চলেছে কেরলেও। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক রিপোর্ট দিয়ে বলেছিল, কেরলে সংক্রমণের হার ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্য সরকারের প্রকাশিত হিসেব অনুযায়ী, একদিনে কেরলে ৩১ হাজার ৪৪৫ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, মৃত্যু হয়েছিল ২১৫ জনের। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় যা ছিল অনেকটাই বেশি।
২৫ অগস্টের পরিসংখ্যাণ বলছে, গোটা দেশে মোট সংক্রমণের ৬৮% কেরল থেকে। ওই দিন সারা দেশে সংক্রমণের হার ছিল ২ শতাংশ, একমাত্র কেরলে সংক্রমণের হার তথা পজিটিভিটি রেট ছিল ১৯.৩ শতাংশ। কোভিড টেস্ট পজিটিভিটি রেট (TPR) বেড়ে যাওয়া মানে হল, আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাওয়া। কেরলে এখন সেটাই হচ্ছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, গত ২৫ অগস্ট সারা দেশে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬০৫ জন, যার মধ্যে শুধুমাত্র কেরলেই ২১৫ জন। অর্থাৎ কেরলে করোনায় মৃত্যুও বেড়ে চলেছে।
সিএসআইআরের ইনস্টিটিউট অব জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির রিপোর্ট বলছে, কেরলে কোভিড পজিটিভ রোগীদের জিনোম সিকুয়েন্স বা জিনগত বিন্যাস বের করে দেখা গেছে, অন্তত ৯৮ শতাংশ রোগীর শরীরেই করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট রয়েছে। কোভিডের ডেল্টা প্রজাতি কেরলে এত বেশি ছড়িয়ে পড়েছে যে সংক্রমণের হার তাই বেড়ে চলেছে। ডেল্টা করোনার সুপার-স্প্রেডার স্ট্রেন। একজনের শরীর থেকে খুব দ্রুত অন্যজনের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। তাছাড়া কেরলে ওনাম উৎসবের জন্য বহু মানুষের জমায়েত থেকেই এই স্ট্রেন ছড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেরলে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে, এক, কোভিড টেস্ট পর্যাপ্ত হচ্ছে না তাই আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না, দুই , করোনার ডেল্টা প্রজাতি। ভিড়, জমায়েত, উৎসব-অনুষ্ঠান থেকে ডেল্টা প্রজাতি ছড়িয়ে পড়ছে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।