
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমেরিকার থেকে প্রিডেটর ড্রোন কেনার পরিকল্পনা ভারতের অনেকদিনের। জম্মু-কাশ্মীরের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নজরদারি, উত্তর-পূর্ব ভারতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে সশস্ত্র প্রিডেটর ড্রোন (Predator Drone) কেনার কথাবার্তা আগেই হয়েছিল। সেই কথাই চূড়ান্ত হয়েছে। অপেক্ষা আর কিছুদিনের। টাকাপয়সার লেনদেন ঠিকঠাক হলই তিন দফায় আমেরিকা থেকে ১০টি করে এমকিউ-৯বি (30 MQ-9B) প্রিডেটর ড্রোন চলে আসবে ভারতীয় বাহিনীর হাতে।
তালিবান প্রধান মোল্লা মহম্মদ ওমর থেকে সিরিয়ার আল কায়দা প্রধান সেলিম আবু আহমেদ— গত দু’দশকে আমেরিকার প্রিডেটর ড্রোনের হামলায় নিকেশ হয়েছে এমন অনেক ‘ মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি’। সেই ড্রোনই এ বার ভারতের হাতে আসতে চলেছে। ভারতীয় স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনার জন্য প্রিডেটরের ‘এমকিউ-৯বি’-র ‘সি গার্ডিয়ান’ (Predator Drone) এবং ‘স্কাই গার্ডিয়ান’ সংস্করণ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে।

জেনারেল অ্যাটোমিক্স গ্লোবাল কর্পোরেশনের মুখ্য আধিকারিক বিবেক লাল জানান, এই ড্রোন নিয়ে ভারত ও আমেরিকার সরকারের মধ্যে কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আমেরিকার সঙ্গে যৌথ উদ্য়োগে শক্তিশালী সশস্ত্র ড্রোন বানানোর পরিকল্পনাও আছে ভারতের।
কী এই প্রিডেটর ড্রোন?
লাদাখ সংঘাতের আবহেই আমেরিকার থেকে ঘাতক প্রিডেটর ড্রোন কেনার পরিকল্পনা করেছিল ভারত। আমেরিকার বায়ুসেনা এই ধরনের সশস্ত্র ড্রোন (Drones) ব্যবহার করে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা এই প্রিডেটর-বি ড্রোনকে বলেন ঘাতক ড্রোন। উঁচু পাহাড়ি এলাকায় নজরদারি চালানো এবং দুর্গম এলাকায় অতর্কিতে শত্রুঘাঁটির উপরে হামলা চালাতে এই ড্রোনের জুরি মেলা ভার। এর উন্নত রাডার ও সেন্সর সিস্টেম অনেক উঁচু থেকেই শত্রুঘাঁটি চিনে নিতে পারে। প্রতিপক্ষ টের পাওয়ার আগেই নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে।

আমেরিকার তৈরি এই ঘাতক ড্রোনকে ‘এমকিউ-৯ রিপার’ বলা হয়। ৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় ২৭ ঘণ্টা ধরে একটানা ওড়ার ক্ষমতা রয়েছে এই ড্রোনের। সর্বোচ্চ বহন ক্ষমতা ১,৭৪৬ কিলোগ্রাম। উঁচু পাহাড়ি এলাকায় নজরদারি চালানো এবং দুর্গম এলাকায় অতর্কিতে শত্রুঘাঁটির উপরে হামলা চালাতে এই ড্রোনের জুরি মেলা ভার। এর উন্নত রাডার ও সেন্সর সিস্টেম অনেক উঁচু থেকেই শত্রুঘাঁটি চিনে নিতে পারে। প্রতিপক্ষ টের পাওয়ার আগেই নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে।
চালকহীন কমব্যাট এরিয়াল ভেহিকল। এতে রয়েছে ৭১২ কিলোওয়াটের টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন। নিজের ওজনের থেকে ১৫ গুণ বেশি ওজন বইতে পারে রিপার ড্রোন। গতি ঘণ্টায় ৪১০ কিলোমিটার। প্রায় ১৭৪৬ কিলোগ্রাম ওজনের পে-লোড বইতে পারে প্রিডেটর-বি।
রাতেও ক্ষিপ্র গতিতে উড়তে পারে প্রিডেটর-বি। ইলেকট্রো-অপটিকাল ও ইনফ্রারেড দুটি ভার্সনই আছে এই ড্রোনের, মাল্টি-মোড রাডার সিস্টেম, ইলেকট্রনিক সাপোর্ট মেজারস সিস্টেম রয়েছে। এই ড্রোন থেকে হেল-ফায়ার মিসাইল ছোড়া যায়। ৫০০ পাউন্ড ওজনের দুটি লেজার-গাইডেড বোমাও নিক্ষেপ করা যায় প্রিডেটর-বি থেকে।