
দ্য ওয়াল ব্যুরো : অভুতপূর্ব মন্দার কবলে পড়তে চলেছে ভারত। চলতি আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও সম্ভবত সংকুচিত হতে চলেছে জিডিপি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্রের নেতৃত্বে অর্থনীতিবিদদের একটি টিম একথা জানিয়েছে।
চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে জিডিপি বা মোট জাতীয় উৎপাদন কমেছিল প্রায় ২৪ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপির সংকোচন হবে সম্ভবত ৮.৬ শতাংশ। কোনও দেশের জিডিপি পরপর দু’টি ত্রৈমাসিকে সংকুচিত হলে তাঁকে ‘টেকনিক্যাল রিসেশান’ বলা হয়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভারতের অর্থনীতিতে সম্ভবত টেকনিক্যাল রিসেশান দেখা দিয়েছে। সরকার এসম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করবে ২৭ নভেম্বর।
অর্থনীতিবিদরা অবশ্য বলছেন, মন্দার পরিস্থিতি কেটে যেতে পারে শীঘ্র। দেশে গাড়ির বিক্রি বাড়ছে। ব্যাঙ্কিং লিকুইডিটি বাড়ছে। ধীরে ধীরে চাঙ্গা হচ্ছে ভোগ্যপণ্যের বাজার। এই পরিস্থিতি যদি বজায় থাকে, তাহলে অক্টোবর-ডিসেম্বরের ত্রৈমাসিকে অর্থনীতি মন্দা কাটিয়ে উঠবে। ফের শুরু হবে বিকাশ।
এর মধ্যে জানা গিয়েছে, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে দেওয়ালির আগেই নতুন আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই প্যাকেজে নতুন চাকরি সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে ভরতুকি দেওয়ার কথা বলা হতে পারে। সম্ভবত নিয়োগকারী ও কর্মচারী, উভয়ের তরফেই প্রভিডেন্ট ফান্ডে ১০ শতাংশ অর্থ দিতে পারে সরকার।
গত ৩১ মার্চ ‘প্রধানমন্ত্রী রোজগার প্রোৎসহান যোজনা’ শেষ হয়েছে। সেই প্রকল্প নতুন রূপে ফের ঘোষণা করা হতে পারে। তার অধীনে আগামী দু’বছর নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে ভরতুকি দেওয়া হতে পারে। একটি সূত্রে খবর, যে কোম্পানিতে কর্মীর সংখ্যা ৫০ জন অথবা তার কম, সেখানে অন্তত দু’জন নতুন কর্মী নিয়োগ করতে বলা হবে। যে কোম্পানিতে কর্মীর সংখ্যা ৫০-এর বেশি, সেখানে অন্তত পাঁচজন নতুন কর্মী নিয়োগ করতে বলা হবে। তবেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ভরতুকি দেওয়া হবে। সম্প্রতি শ্রমমন্ত্রক থেকে এই ভরতুকির প্রস্তাব দ্দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে আলোচনা হয়েছে।
কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর দাবি করেন, অপ্রত্যাশিত দ্রুত গতিতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারতের অর্থনীতি। তিনি তথ্য দিয়ে বলেন, গত অক্টোবরে জিএসটি সংগ্রহ ছাড়িয়ে গিয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে এই প্রথম এত বেশি পরিমাণে জিএসটি আদায় হয়েছে। অন্যান্য করও আদায় হয়েছে ভাল পরিমাণে। ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেসের মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্টও বাড়ছে দ্রুত গতিতে। দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। রেলে বৃদ্ধি পেয়েছে পণ্য পরিবহণ।