
শিশুকন্যা ধর্ষণে আজীবন জেল, ১ দিনে অভিযুক্তকে দোষী ঘোষণা পকসো কোর্টের
মামলার বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি জানান, যাবতীয় মেডিকেল ও চোখে দেখা প্রমাণে ইঙ্গিত, অভিযুক্ত অপরাধ করেছে। পাল্টা অভিযুক্ত তা অস্বীকার করে। কিন্তু তার ভিত্তি খুঁজে পায়নি আদালত। ধর্ষিতার সাক্ষ্য বিশ্বাস করে আদালত বলেছে, গোটা ঘটনাটি জলের মতো সহজ করে বুঝিয়েছে সে, তাকে অবিশ্বাস করার মতো কিছুই নেই।
আদালত রায়ে বলেছে, ওকে জোর করে কিছু বলানোর দরকার হয়নি। নিজের বক্তব্যে ও অটল, অনড় ছিল। তার বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা, গ্রহণযোগ্যতা খারিজ করার মতো কিছুই মেলেনি। সুপ্রিম কোর্টের একটি পুরানো মামলার পর্যবেক্ষণের উল্লেখ করে বিচারক জানান, সঙ্গতি থাকার জন্যই নিগৃহীতার বক্তব্যে ভরসা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় ছিল, যদি কোনও শিশু সাক্ষী বিশ্বাসযোগ্য কথা বলে, তবে তার ভিত্তিতে কাউকে দোষী ঘোষণা করা যায়। দশ সাক্ষীর বক্তব্য শোনে আদালত। দোষী জানায়, সে গরিব ঘরের ছেলে। আর কোনও অপরাধ করেনি। সুতরাং সাজা ঘোষণার ক্ষেত্রে আদালত যেন নমনীয় হয়। সরকারি কৌঁসুলি আদালতকে যে কায়দায় ধর্ষণ করা হয়েছে, তা মাথায় রেখে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার আবেদন করেন।
আদালত অপরাধ, সমাজের ওপর তার প্রভাব ও ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা বিবেচনা করে জানায়, দোষীকে কোনওরকম নমনীয়তা দেখানো যায় না। বিচারক বলেন, আমার মত, অভিযুক্তের প্রায় ৩০ বছর বয়স, নির্যাতিতার বয়স ৮-৯ বছর অর্থাত সে অভিযুক্তের চেয়ে প্রায় ২০ বছরের ছোট। তার শরীরে যৌনতার লক্ষণগুলি সেভাবে পরিস্ফুট নয়। সুতরাং অভিযুক্তের বিন্দুমাত্র নমনীয়তা প্রাপ্য নয়।
আদালত আরও বলে, অপরাধের মাত্রা, গুরুত্ব, ভয়াবহতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সাজা কাম্য, অকারণে নমনীয় হওয়া ঠিক নয়। দোষীকে জীবনের বাকি মেয়াদ জেলে কাটাতে হবে। তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও হয়েছে, যার ৭৫ শতাংশ দেওয়া হবে ধর্ষিতাকে। তাছাড়া সে নির্যাতিতা ক্ষতিপূরণ স্কিমের সুবিধা পাবে। আরারিয়া ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটিকে তাকে ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছে আদালত।