
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারত তথা আন্তর্জাতিক শিল্প মানচিত্রে আদানি গোষ্ঠীর (Gautam Adani) উত্থান উল্কার মতো। কিন্তু মার্কিন সংস্থার হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পর যে পতন শুরু হয়েছে তা আর মামুলি বলা যাবে না। বরং এ যেন মহাপতন! নামছে তো নামছেই। শুক্রবার শেয়ার বাজার খুলতেই আদানি পাওয়ার, আদানি টোটাল গ্যাস ও আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ পড়ে গেল! একই ভাবে পড়তে শুরু করে আদানি এন্টারপ্রাইজ ও আদানি পোর্টসের শেয়ারের দাম। ফলে কেনাবেচা স্থগিত রাখতে হয় কিছুক্ষণের জন্য।
এর পর ফের কেনাবেচা শুরু হয় ঠিকই, কিন্তু তাতেও পতন রোখা যায়নি। আদানি পাওয়ার, আদানি টোটাল গ্যাস ইত্যাদির শেয়ার আরও ৫ শতাংশ পড়ে যায়। ফলে আবার কেনাবেচা থামাতে হয়।
আদানির সম্পদ মূল্যায়নে প্রচুর জালিয়াতি রয়েছে বলে দাবি করেছিল মার্কিন শর্ট সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তাদের এও বক্তব্য, ভারতের সম্পত্তি লুঠ করছে আদানি। তারা তাদের লিস্টেড কোম্পানি থেকে কর ফাঁকি দেওয়া টাকা সাইপ্রাস সহ ট্যাক্স হেভেনগুলিতে সরিয়েছে। তার পর সেই টাকা ভুয়ো কোম্পানি মারফৎ ফের বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত কোম্পানিতে।
আদানি কাণ্ডের ছায়া বাংলাদেশে, হাসিনার দেশের পাশে থাকবে কি ভারত
এই তথ্য ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আদানি দাবি করলেও, হিন্ডেনবার্গের বক্তব্য তাদের আসল প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছে আদানি শিল্পগোষ্ঠী। এই চাপানউতোরের পরিস্থিতিতে আদানি শিল্পগোষ্ঠী সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের একাংশের মধ্যে প্রবল অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শেয়ারের দাম কমতে কমতে আদানির মার্কেট ক্যাপ ১০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে গিয়েছে। শুক্রবার তার আরও বেশ খানিকটা কমে গেল। দিনের শেষে বাজার বন্ধ হলে বোঝা যাবে শুধু শুক্রবার কত রক্তপাত হল আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারগুলিতে।
এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক সূচক এস অ্যান্ড পি ডাও জোনস জানিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার তারা সরিয়ে দেবে। যা আরও বড় অস্বস্তির কারণ হতে চলেছে। অন্যদিকে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ আদানির তিনটি সংস্থার শেয়ারের উপর কড়া নজরদারি রেখেছে। সেই তিন সংস্থা হল আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি পোর্টস এবং অম্বুজা সিমেন্ট। তার ফলে এই তিন সংস্থার শেয়ার কেনাবেচায় ইন্ট্রা-ডে লিভারেজও এখন সীমিত হয়ে গেল।
গত বছর বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন গৌতম আদানি। এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। কিন্তু শেয়ার বাজারে ধসের পর এখন তালিকায় ১৭ নম্বর স্থানে নেমে এসেছেন তিনি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সে এখন তাঁর স্থান ২১ নম্বরে। ফলে এখন এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি হলেন মুকেশ আম্বানি।