
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাল্যবিবাহ রুখতে কড়া অসম সরকার (Assam’s Child Marriage Crackdown)। রাজ্যজুড়ে ধড়পাকড় চলছে। দু’হাজারের বেশি পুরুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাবালিকা বিয়ে রুখতে আইন কড়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে একের পর এক পরিবার। পুলিশের কাছে কান্নায় ভেঙে পড়ে এমনটাই জানাচ্ছেন বাড়ির মহিলারা। একদিন হয়ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুতুল খেলার বয়সে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি এসেছিলেন। কিন্তু আজ তিনি এক বা দুই সন্তানের মা, ভরা সংসার। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ির কর্তাকে গ্রেফতার করলে রোজগার হবে কী করে, আর বাচ্চাদের খাওয়াবেনই বা কী! রাজ্য জুড়ে হাহাকার করছেন মহিলারা।
ছোটবেলায় বিয়ে হয়েছিল রেজিনা খাতুনের। স্বামীও ছিলেন নাবালক। আজ তাঁদের দুই সন্তান। সংসারে খুব খুশি রেজিনা, স্বামীকেও ভালবাসেন। তার ২টোর সময় বাড়িতে এসে রেজিনার স্বামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে পুলিশ। সন্তানকে কোলে আঁকড়ে কেঁদেই চলেছেন তরুণী। সংসারে অভাব, স্বামীই একমাত্র রোজগেরে। এখন কী হবে?

১৭ বছরের গোপাল বিশ্বাস পাশের বাড়ির মেয়েটার সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। বদনাম মুছতে কিশোরবেলাতেই বিয়ে দিয়েছিলেন বাবা-মা। এখন দুই বাড়িতেও কোনও সমস্য়া নেই। কিন্তু গোপালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাবা-মায়ের কান্না আর কাকুতি মিনতিতেও কাজ হয়নি। পুলিশ কোনও কথাই শুনতে চায় না।
“আমার ছেলে ও বৌমা নাবালক-নাবালিকা নয়। কিন্তু আধার কার্ডে বয়স নিয়ে সমস্যা হয়েছে কিছু। পুলিশ ছেলেকে ধরে নিয়ে গেল, কথাই শুনল না”, রিজবুলের স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
বিশ্বভারতীকে বিশ্বের প্রথম হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান দিতে চলেছে ইউনেস্কো
অসম সরকার জানিয়েছে, চার হাজারের বেশি বাল্য়বিবাহের ঘটনা সামনে এসেছে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই যাঁরা বিয়ে করেছিলেন বা ইদানীংকালেও যাঁদের বিয়ে হয়েছে, তাঁদের সকলকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যাঁরা বাল্যবিবাহ আইন অমান্য করেছেন, তাঁদের রেয়াত করা হবে না। তাঁর ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দেশজুড়ে ধরপাকড় শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছে ৮ হাজার অভিযুক্তের তালিকা রয়েছে।
সরকারের এই ভূমিকায় অসন্তোষ এবং ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাড়ির মহিলাদের মধ্যে। রাস্তায় নেমে এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শয়ে শয়ে মহিলা। এই গ্রেফতারি অনেক সংসার ভাসিয়ে দিচ্ছে বলেই অভিযোগ করেছেন তাঁরা।