Latest News

আদানির সঙ্গে চ্যাং চুংয়ের কী সম্পর্ক? চিনা যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল হিন্ডেনবার্গ

দ্য ওয়াল ব্যুরো: পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে ‘হাওড়া ব্রিজ’ ছবিতে গীতা দত্তর গাওয়া একটা গান খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল— মেরা নাম চিন চিন চু বাবা চিন চিন চু…। হিন্দি ছবিতে এমন চৈনিক স্পর্শ বিষ্ময় তৈরি করেছিল!

আদানি-হিন্ডেনবার্গ বিতর্ক (Adani-Hindenburg Clash) যেন সেই গান মনে করিয়ে দিল। চলতি এই বিতর্কে হঠাৎ করে হাজির এক চৈনিক চরিত্র। তাঁর নাম চ্যাং চুং লি!।

হিন্ডেনবার্গ প্রশ্ন তুলেছে, কে এই চ্যাং চুং লিং (Chang Chung-Ling)? তাঁর সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক গৌতম আদানির (Gautam Adani) সংস্থার? চ্যাং চুংয়ের সংস্থা গুদামি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কী ব্যবসা চলে এই আদানি গোষ্ঠীর? এ হেন একাধিক প্রশ্নে গৌতম আদানিকে বিদ্ধ করেছে মার্কিং সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিসার্চের রিপোর্ট। যা নিয়ে হইহই পড়ে গিয়েছে।

কিন্তু কে এই চ্যাং চুং লিং? জানা গিয়েছে, ইনি একজন চিনা ধনকুবের। অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠীর অবৈধ সম্পদ জমা হয় এই চিনা ধনকুবেরের সংস্থায়। তারপর সেই টাকায় তারা ব্যবসা করে তাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর-সহ দেশগুলিতে।

হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টকে ভারতের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছে আদানি গোষ্ঠী। আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতির সম্পদের হিসেব পুরোটাই সাজানো বলে দাবি করেছে হিন্ডেনবার্গ। আদানি গোষ্ঠী আইনি যুদ্ধে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও দমেনি হিন্ডেনবার্গ। বরং বলেছে, কোনও অসুবিধা নেই। আসুন আপনারা। আমাদের কাছে সব তথ্য আছে। সেইসঙ্গে মার্কিন সংস্থাটি আদানিদের উদ্দেশে এই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে, আচ্ছা চ্যাং চুং লিংয়ের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্কের কথা বলছেন না কেন?

অগস্তা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারিতে এই চ্যাং চুং লিং জড়িত ছিল বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। সেই সঙ্গে মার্কিন সংস্থার রিপোর্টে এই দাবিও করা হয়েছে, চ্যাং চুং লিংয়ের ছেলে আদানি গোষ্ঠীর থেকে সুবিধাভোগীদের অন্যতম।

নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতের শিল্প আকাশে গৌতম আদানির উল্কা গতিতে উত্থান হয়েছিল। সেই উত্থান শুধু ভারতের আকাশে থেমে থাকেনি। আদানিদের সম্পদের ছটা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই তারার উপর এখন সন্দেহের মেঘ ঘনীভূত হয়েছে। যা সরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে আদানি গোষ্ঠী। তাদের ২০ হাজার কোটি টাকার এফপিও পুরোটাই বিক্রি হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে আদানি।

কিন্তু হিন্ডেনবার্গ যেন ছেড়ে কথা বলার পাত্র নয়। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আদানিরা যে তাদের সব ব্যবসার শেয়ারের দাম বাড়িয়ে রেখেছে তা আসলে কৃত্রিম। এর শক্তপোক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তি নেই। বরং পুরোটাই একটা মোড়ক। আসলে ভিতরটা ফাঁপা।

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের দাবি, চিনা ওই সংস্থার সঙ্গে আদানিদের অবৈধ বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে। আদানিদের কোম্পানির মোটা অঙ্ক ওই চিনা ধনপতির সংস্থায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি সিঙ্গাপুর ও তাইল্যান্ডে আদানির একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর।

তাইওয়ান মিডিয়ার প্রকাশিত রিপোর্টকেও উল্লেখ করেছে হিন্ডেনবার্গের গবেষণাপত্র। তাতে বলা হয়েছে, কর্পোরেট রেকর্ড বলছে গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানি আর চ্যাং চুং লিং কার্যত একই সত্ত্বা। শুধু এটুকু বলেই থেমে যায়নি ওই রিপোর্ট। ঠিকানাটা কী তাও বলে দেওয়া হয়েছে। তা হল—১৭-০১ হাওয়াই টাওয়ার, ৭৫ মেয়ের রোড, সিঙ্গাপুর।
এখন দেখার, আদানিরা চ্যাং চুং লিংয়ের ব্যাপারে কোনও কিছু খোলসা করেন কি না!

মোদী: সম্পদ ও বোঝা

You might also like