Latest News

পোষ্যের শ্রাদ্ধে পেটপুরে খেল একশোর বেশি বালক

দ্য ওয়াল ব্যুরো: টানা আট বছর ধরে জিমি ছিল পরিবারের অন্যতম সদস্য, ছিল সুখ-দুঃখের ভাগীদার। তাই মৃত্যুর পরে তাকে ‘প্রাপ্য’ সম্মান জানাতে কুণ্ঠাবোধ করলেন না রতন গোস্বামী। দক্ষিণ বারাসত অঞ্চলের দক্ষিণ কালিকাপুর মণিমালা মাঠ এলাকা বাসিন্দা রতন গোস্বামীর পরিবারের এক জন ছিল জিমি। তাকে পরিবারের লোকজন জিমি গোস্বামী পরিচয় করাতেন।

জিমি ছিল পোষ্য সারমেয়। পরিবারের সকলে মিলে তার নাম রাখে জিমি। আট বছর একসঙ্গে থাকার পর গত বছরের শেষ দিন আচমকাই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি জানান যে, জিমি মারা গেছে।

তার মৃত্যুতে গোস্বামী পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। রতন গোস্বামীর ছেলে চঞ্চল মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। পরিবারের লোকজন আলোচনা করে ঠিক করেন, পরিবারের কোনও সদস্য মারা গেলে যেভাবে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করা হয়, জিমির ক্ষেত্রেও সমস্ত নিয়ম মেনে সেভাবেই শ্রাদ্ধ করা হবে।

জিমির মৃতদেহ কবর দেওয়ার পর পরিবারের লোকজন অশৌচ পালন করতে শুরু করেন, অগ্নিকর্তার মতো গলায় কাছা ধারণ করেন চঞ্চল। পুরোহিতের পরামর্শ মতো তাঁরা নিরামিষ খান এবং নির্দিষ্ট দিনে মাথা নেড়া করে অশৌচান্ত ঘটান চঞ্চল। বাড়িতেই আয়োজন করা হয় শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের। নিমন্ত্রণ করা হয় প্রতিবেশী শিশুদের।

আজ সোমবারপোষ্যের শ্রাদ্ধে শতাধিক শিশুর খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বাড়ির কাছে জিমির সমাধি করা হয়, আত্মীয় পরিজনরা সেই সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাযন। এভাবে পোষ্যের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান দেখে অবাক হয়ে যায় দক্ষিণ বারাসতের মানুষ।

মানুষের সঙ্গে যতদিন কোনও পোষ্য বসবাস করে ততদিন সে পরিবারের একজন হয়েই থাকে। পরিবারের কারও বিয়োগ হলে সেও ব্যথা পায়। যাঁরা পশুদের সান্নিধ্যে থাকেন তাঁরা সেই অনুভূতির কথা জানেন। বন্য হাতির মৃত্যুর পরে যূথের অন্য সদস্যদর শোক জ্ঞাপন করতে দেখেছেন গবেষকরা, শুশুকদের ক্ষেত্রেও তা দেখা গেছে। ব্যতিক্রম দেখা যায় পোষ্যদের ক্ষেত্রে। অনেক সময় ঘটা করে বিড়ালের বিয়ে দেওয়া হলেও মৃত্যু পরে শ্রাদ্ধ করার কথা তেমন ভাবে শোনা যায় না, মফসসলে তো নয়ই। কোনও কোনও পোষ্যের অন্ত্যেষ্টি হয় ঠিকই, তবে সকলেরই হয় এ কথা বলা যায় না। সেদিক থেকে বিচার করলে এমন শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করা বেশ ব্যতিক্রমী ঘটনা, বিশেষ করে মফসসলে।

You might also like