
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিদেশি অতিথিকে উপহার দেওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতির বরাবরের রীতি। নয়াদিল্লির কূটনীতিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি কখনও। সাউথ ব্লকের দেওয়া সেই উপহার এমন হয় যাতে ভারতীয় শিল্প ও ঐতিহ্যের ছোঁয়া থাকে। কখনও তা হাতির দাঁতের তৈরি, কখনও মার্বেলের, কখনও বা লোক শিল্পীদের তৈরি কোনও উপহার।
শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে সফররত চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্য এ বার বিশেষ এক উপহার আগেই তৈরি করে রাখা হয়েছিল। তা হল একটি পোর্ট্রেট। এবং তা জিনপিংয়েরই।
ওই পোর্ট্রেটটি তৈরি করা হয়েছে মালবেরি রেশম দিয়ে, যার উপরে রয়েছে সোনার জরির কাজ।
সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকে এই রেশম ভারতে তৈরি হয়ে আসছে। এখন জম্মু-কাশ্মীর, পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ুতে এই রেশম তৈরি হয়। বোম্বিক্স মোরি নামের মথের গুটি থেকে তৈরি এই রেশম। তারপরে নকশা করা হয়েছে জরি, মানে সত্যিকারের সোনার সুতো দিয়ে। মাত্র পাঁচ দিনে এটি বুনেছেন রামলিঙ্গম সৌদাম্বিগাই।
শি জিনপিং অবশ্য উপহার পেয়ে অস্বস্তিতে পড়েননি, কারণ রিটার্ন গিফ্ট হিসাবে তিনি একেবারে চিনামাটির উপরে মোদীর পোর্ট্রেট উপহার দিয়েছেন। চিনামাটির তৈরি পুরোনো জিনিসের কদর সারা বিশ্বেই রয়েছে, মোদীর পোর্ট্রেটি পুরনো নয় ঠিকই, তবে মোদীর কাছে নিশ্চয়ই তার কদর আছে।
রেশম উৎপাদনে বিশ্বে চিনের পরেই ভারতের জায়গা। আর কাপড়ের উপরে সোনা-রূপো দিয়ে আঁকাকে তিব্বতিরা বলেন থাঙ্কা। ভারতেও থাঙ্কা তৈরি হয়, সত্যিকারের থাঙ্কা এখনও তৈরি হয় অরুণাচলপ্রদেশে। রেশম প্রথম চিনেই উৎপাদন হয়েছিল বলে চিনের দাবি। যদিও সিন্ধু সভ্যতার পরেই বিকাশ হয়েছিল চিনের সভ্যতার। তবে পোর্সেলিনের ব্যাপারে ফ্রান্স এগিয়ে গেলেও, এর উৎপত্তি চিনে, এ কথা মোটামুটি সকলেই মেনে নিয়েছেন।
শুধু একটা বিশাল পোর্ট্রেট নয়, চিনের প্রেসিডেন্টকে রাধাকৃষ্ণের ছবি আর প্রায় এক-মানুষ সমান একটা পিতলের প্রদীপ উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দক্ষিণ ভারতের পিতলের কাজের খ্যাতি আছে। প্রদীপ হল একেবারে খাঁটি ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতীক।
প্রধানমন্ত্রী মোদী যা উপহার পেয়েছেন, সম্প্রতি তা নিলামে চড়িয়েছেন, প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের উপহার সাজানো আছে পাটনা জাদুঘরে। শি কী করবেন তা জানা নেই, হতে পারে এটি তিনি রেখে দেবেন নিজের ঘরে।
https://www.four.suk.1wp.in/pujomagazine2019/তাহু-ফল-ঐশ-রোষ-ও-পিগমি-সমাজ-2/