
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কী ভেবে এসেছিল, আর কী দেখল! শুধু দেখল কি? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, কী শিখল ওরা!
বিধানসভায় অধিবেশন চললে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের দল বেঁধে নিয়ে আসা বহু পুরনো রেওয়াজ। উদ্দেশ্য একটাই। আইনসভা কেমনভাবে চলে, শাসক-বিরোধী শিবির কী ভাবে যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে বিতর্ক করে তা হাতে কলমে দেখানো। কিন্তু বুধবার বারুইপুর পদ্মপুকুর মধ্য বিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা এসে বিধানসভায় (WB Assembly) যা চাক্ষুষ করল, তা তাদের কল্পনার অতীত ছিল।
এদিন বিধানসভায় (WB Assembly) কী হয়েছে?
বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে মুখর হয়েছেন বিরোধীরা? কিংবা দেশের অর্থনীতি, জিডিপি নিয়ে যুক্তির ঠাসবুনট যুক্তিজাল বুনেছে তৃণমূল? কোনওটাই নয়। অনেকের মতে, এদিন বিধানসভায় যা দেখা গিয়েছে পাড়ার চায়ের ঠেক কিংবা রবিবারের রোয়াকের আড্ডাতেও দেখা যায় না।
তৃণমূল রাহুল সিনহা-শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দিয়ে পোস্টারে লিখেছে ডোন্ট টাচ মাই বডি আর বিজেপি স্লোগান দিয়েছে, পিসি চোর, ভাইপো চোর, তৃণমূলের সবাই চোর।
অধিবেশন তো চলেইনি বরং বাইরে দুপক্ষের কাজিয়া দেখেছে (TMC-BJP Clash) আইনসভার ধারণা পেতে আসা ছাত্ররা। যা দেখে বারুইপুরের স্কুলটির একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া দীপ নস্কর স্পষ্ট করেই বলল, এইসব মেল-ফিমেল ইস্যু নিয়ে আলোচনা না হলেই ভাল হত। তাছাড়া বিধায়কদের থেকে আরও শৃঙ্খলা আশা করেছিলাম।
এই পদ্মপুকুর মধ্য স্কুল বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচন কেন্দ্র বারুইপুরের মধ্যেই পড়ে। বারুইপুরে বিমানবাবুর আস্থাভাজন তৃণমূল নেতা গৌতম দাস ওই স্কুলের অদূরেই থাকে। বলতে গেলে গৌতমের মূল প্রতিপত্তিই বারুইপুর পদ্মপুকুরে। সেখানকার স্কুলের ছেলেমেয়েদেরই আনা হয়েছিল বিধানসভার অধিবেশন দেখাতে।
স্কুলের শিক্ষিকা মৌসুমী কর্মকারেরও বক্তব্য, বড্ড বিশৃঙ্খলা দেখলাম। এরকমটা না হলেই ভাল হত। আর পড়ুয়া সবনম সুলতানার বক্তব্য, বিধানসভা দর্শনের প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে হবে তাদের।
প্রশ্ন হল, প্রেজেন্টেশনে কী লিখবে ওরা? বাংলার জনপ্রতিনিধিরা বিধানসভায় দাঁড়িয়ে যুক্তি-তর্ক দূরে ঠেলে ব্যস্ত কাদা ছোড়াছুড়িতে? অনেকের মতে, রাজনীতির এই দশাকে একদিনের ঘটনা দিয়ে মাপা ঠিক হবে না। এটা তৈরি হতে সময় লেগেছে। এবং এর অভিঘাতও সুদূরপ্রসারী।
তৃণমূল-বিজেপি পোস্টার যুদ্ধ বিধানসভায়, বহুদিন পর জমজমাট রাজনীতি