
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা তথা এলএসি এবং গিলগিট-বালটিস্তানে পাক-ভারত নিয়ন্ত্রণরেখা তথা এলওসি—এই দুই দিক থেকে ভারতকে চাপ দেওয়ার জন্য নয়া পরিকল্পনা সাজিয়েছে চিন। কিন্তু চিনা ছকের পাল্টা কৌশলগত পদক্ষেপে অনেকটাই এগিয়ে ভারত। একদিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থলসেনা, মাউন্টেন কমব্যাট ফোর্স ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলছে ভারত, অন্যদিকে ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টেও সেনার সংখ্যা বাড়াচ্ছে। সূত্রের খবর, এলওসি-তে পাক সেনাদের তৎপরতা বাড়ায় সেখানেও কড়া নজর রাখা শুরু করেছে ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা।
পাক-চিন যৌথ আঁতাতে দুই সীমান্তেই ভারতের উপর সামরিক চাপ বাড়তে পারে এমন সম্ভাবনার কথা আগেই বলেছিলেন বায়ুসেনার এক প্রাক্তন অফিসার। সম্প্রতি গোয়েন্দা সূত্রও খবর দিয়েছে, ভারতের শক্তির কাছে মাথা নোয়াতে না পেরে শেষে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে চিন। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে ঝিমিয়ে পড়া জঙ্গি গোষ্ঠী আল-বদরের সঙ্গে গোপন আলোচনা চলছে চিনা লাল ফৌজের। কাশ্মীরে নাশকতা জিইয়ে রেখে ভারতীয় সেনাকে ব্যাতিব্যস্ত করে রাখাই এর উদ্দেশ্য। অন্যদিকে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সামরিক পরিকাঠামো বাড়িয়ে সেখানে ভারতীয় সেনাদের যুক্ত করে রেখে পাক সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে চাপ বাড়ানোও উদ্দেশ্য চিনের।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট-বালটিস্তানে প্রায় ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। অন্যদিকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিনা বায়ুসেনার গতিবিধিও লক্ষ্য করা গেছে। সেখান থেকেও চিন হামলা চালাতে পারে এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গিলগিট-বালটিস্তানে পাক সেনা মোতায়েন করার পরিকল্পনা চিনেরই। লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনার আবহে পাকিস্তানের সঙ্গে ছক কষে ভারতের উপর চাপ বাড়াতে নয়া কৌশল নিচ্ছে চিন।
আরও পড়ুন: ‘এটাই চিনা কমিউনিস্ট পার্টির আসল রূপ’, ভারতের বিরুদ্ধে বেজিংয়ের আগ্রাসন নিয়ে বলল আমেরিকা
নর্দার্ন আর্মি কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডিএস হুডা (অবসরপ্রাপ্ত)বলেছেন, তিন পরমাণু শক্তিধর দেশ মুখোমুখি সংঘাতের পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। চিনা ও পাক সেনাদের যোগসূত্র আজকের নয়। দুই সীমান্তে ভারতকে নাজেহাল করতে ফের তারা জোট বেঁধেছে। তবে ভারতীয় বাহিনীকে দুর্বল ভাবলে ভুল হবে। যে কোনও পরিস্থিতির জন্যই তৈরি ভারতীয় সেনা। রণকৌশলে ও সামরিক পরিকাঠামে ভারত প্রস্তুত হয়েই রয়েছে।
লাদাখ ও এলওসি তে ৩০ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। রয়েছে ভারতের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ঘাতক কম্যান্ডোরা। আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রাখতে মিরাজ-২০০০, সুখোই-৩০, মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান নামিয়েছে ভারত। সীমান্তে চিনা ফৌজের গতিবিধি নজরে রাখছে অ্যাটাক হেলিকপ্টার অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই, সিএইচ-৪৭ এফ চিনুক মাল্টি-মিশন হেলিকপ্টার। সীমান্তে টহল দিচ্ছে ইজরায়েলি সশস্ত্র হেরন ড্রোন। তাছাড়া, ‘কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম’ মোতায়েন করছে ভারত, নামানো হয়েছে টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক, এম-৭৭৭ আলট্রা-লাইট হাউইৎজার কামান।