
ব্যানার, প্ল্যাকার্ডে ছয়লাপ হয় কোহিমা। তাতে লেখা, ‘আফস্পা বাতিলের আগে আর কতবার গুলি চলবে’, ‘আমাদের কণ্ঠ নয়, বাতিল হোক আফস্পা’। নাগাদের অসন্তোষের পারদ ক্রমশঃ চড়ছে। সূচনা হয়েছিল কোনিয়াক ইউনিয়নের (কোনিয়াক নাগা গোষ্ঠীর সর্বোচ্চ সংগঠন) ‘অসহযোগ আন্দোলন’ দিয়ে। এবার ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশনও কোনিয়াক ইউনিয়নের সুরে যাবতীয় সরকারি, জাতীয় উত্সব পালন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেনার অসামরিক কর্মসূচিতে সামিল হবে না বলে জানিয়েছে। এলাকায় সেনাবাহিনীর লোকজন নিয়োগের প্রক্রিয়াও চালাতে দেবে না।
বৃহস্পতিবার মন জেলায় ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বনধ পালিত হয়। সরকারি, বেসরকারি দপ্তর বন্ধ ছিল। যানবাহন চলাচল বিপর্যস্ত হয়। মন ছাড়াও প্রতিবাদ ছড়িয়েছে কিফিরে, তুয়েনসাং, নোকলাক, লংলেং জেলায়। দোকানপাট বন্ধ রেখে বিক্ষোভে সামিল হয় লোকজন। তাদের দাবি, সেনাবাহিনীর ভুল করে গুলিচালনায় যুক্ত জওয়ানদের এখনই গ্রেফতার চাই। ৬ ডিসেম্বর সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে ‘মিথ্যা’ ও ‘সাজানো’ বিবৃতি দিয়েছেন, তাও প্রত্যাহার করতে হবে। শাহ বিবৃতিতে বলেছিলেন, নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও গ্রামবাসীদের নিয়ে যাওয়া ট্রাক গতি বাড়িয়ে দেয়, তাই সন্ত্রাসবাদীরা যুক্ত থাকতে পারে, এমন সন্দেহেই গুলি চালিয়েছিল সেনার ইউনিট। শাহের মন্তব্যে মনে প্রবল প্রতিবাদ হয়েছে, তাঁর কুশপুতুলও পুড়েছে। সেদিন মারা যান ৬ জন। সেই ট্রাকে বা তার আরোহীদের হেফাজত থেকেও অস্ত্রশস্ত্র মেলেনি। আরোহীরা ছিলেন কয়লাখনি শ্রমিক। পরের ৪৮ ঘন্টায় ফের হিংসা মাথাচাড়া দিলেন আরও ৮ গ্রামবাসী ও এক জওয়ান নিহত হন।
সেনার তরফে গুলিচালনায় দুঃখপ্রকাশ করে অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলেও তাতে ভরসা নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা ‘উপদ্রুত এলাকা’য় সামরিক বাহিনীর হাতে অবাধ, বেলাগাম ক্ষমতা দেওয়া আফস্পা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। গোটা উত্তরপূর্বে আফস্পা বাতিলের দাবিতে সরব নাগাল্যান্ড ও মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রীরা। আফস্পা বহাল রয়েছে নাগাল্যান্ড, অসম, মনিপুর (ইম্পল বাদে),অরুণাচল প্রদেশের কিছু অংশ ও জম্মু কাশ্মীরে।