
একসময় বিজেপিতে ‘লৌহপুরুষ’ বলা হত লালকৃষ্ণ আডবাণীকে। লোকসভায় বিজেপির ২ থেকে ৮৯ হওয়ার পিছনে বর্তমানে রাজনৈতিক বাণপ্রস্থে চলে যাওয়া আডবাণীর ভূমিকা কম নয়। তবে আডবাণী যুগ অস্তাচলে গিয়েছে অনেকদিন। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলের পর থেকে গত ৭ বছরে বিজেপিতে চলছে মোদী-শাহ যুগ। মোদীকে তুলে ধরা হয়েছে বিকাশ পুরুষ হিসাবে। তিনি ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ স্লোগান দিয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তাতে যোগ হয়েছে, ‘সবকা সাথ, সব কা বিশ্বাস’ স্লোগানও। জনমনেও বালাকোট হামলা, সার্জিকাল স্ট্রাইক, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, অযোধ্যা রামমন্দির নির্মাণে সর্বোচ্চ আদালতের রায় থেকে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে, মোদীই পারেন, ‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’। অনেকে বলেন, এই ধারণা কৃত্রিম ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। সেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাজের ধারা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে প্রাক্তন মনমোহন সিংয়ের তুলনা টেনে আনলেন আর এক প্রবীণ নেতা তথা মারাঠা স্ট্রং ম্যান শরদ গোবিন্দ পাওয়ার। যিনি মনমোহন সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন।
পুণেতে এক অনুষ্ঠানে মোদীর নেতৃত্বের গুণগান গেয়ে এনসিপি সভাপতির বক্তব্য, একবার কোনও কাজ হাতে নিলে তিনি সেটা শেষ করেই ছাড়েন। ভীষণ উদ্যোগী, লক্ষ্য পূরণে যথেষ্ট সময় দেন।
বিজেপি, মোদী তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতিতে থাকার সুবাদে একজন নেতা হিসাবে মোদীর মধ্যে আলাদা কী দেখেছেন, জানতে চাওয়া হলে শরদ বলেন, যে কোনও নির্দিষ্ট কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত উনি থামেন না। এটাই ওঁর বৈশিষ্ট্য। উনি প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন, যা ওঁর শক্তি।
প্রবীণ রাজ্যসভা সদস্যের মতে, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত যদি আমজনতার প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তাহলে একজন যতই কঠিন পরিশ্রম করুন না কেন, তা যথেষ্ট হয় না। এই ক্ষেত্রে আমি একটা ঘাটতি অবশ্য দেখি। সরকারি নীতির সফল রূপায়ণ সুনিশ্চিত করতে কীভাবে প্রশাসন ও তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মীরা একসঙ্গে চলতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী তার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিজের সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে চলার একটা আলাদা ঢং আছে, যা মনমোহন সিংয়ের মতো প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে ছিল না।
মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস-এনসিপি-শিবসেনা জোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে তিনি কি কখনও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন? শরদ জানান, এ নিয়ে তিনি কখনও কথা বলেননি, ভবিষ্যতেও বলবেন না।