
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জিনিসপত্রের দাম নিয়ে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata-Modi)। বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ৮০০-র বেশি ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাস্তার টোল, রান্নার গ্যাস পেট্রল, ডিজেল, সব কিছুরই দাম বাড়ছে। কমছে শুধু সৌজন্যের।
সৌজন্যের দাম কমছে বলে মন্তব্যের কোনও ব্যাখ্যা দেননি মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলের একাংশের বক্তব্য, নাম না করলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই নিশানা করতে চেয়েছেন (Mamata-Modi)। গত মাসের ২৭ তারিখ দেশের কোভিড পরিস্থিতি এবং চতুর্থ ঢেউয়ের মোকাবিলা নিয়ে রাজ্যগুলির প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রী মোদী মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেখানে অ্যাজেন্ডার বাইরে গিয়ে তিনি হঠাৎ করেই পেট্রল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ুর মতো অবিজেপি রাজ্যগুলিকে নিশানা করেন। বলেন, ওই সব রাজ্য সরকার ভ্যাট বাবদ জ্বালানি তেল থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। তাই বিজেপি শাসিত রাজ্যের তুলনায় অবিজেপি শাসিত রাজ্যে জ্বালানি তেলের দাম বেশি।
করোনা নিয়ে ঢিলেমি নয়, মাস্ক পরুন, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর ওই সমালোচনার সেদিনই কড়া জবাব দিয়েছিলেন মমতা। তবে বৈঠকে জবাব দেওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন সাংবাদিক বৈঠকে। বলেন, এটা রাজনৈতিক অসৌজন্য।
দিন সাতেক আগে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অনুপ্রবেশ নিয়ে যে ভাষায় রাজ্য সরকাররে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাতেও সৌজন্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেদিন বনগাঁয় বিএসএফের অনুষ্ঠানে বলেন, অনুপ্রবেশ, চোরাচালান আটকাতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। অচিরেই বাংলায় এমন অনুকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হবে যাতে প্রশাসন সহযোগিতা করে। তৃণমূল অমিতের ওই মন্তব্যকে রাজ্যে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের হুঁশিয়ারি বলে মনে করছে।
গতকাল অসমের মাটিতে দাঁড়িয়ে অনুপ্রবেশ নিয়ে ফের বাংলার বিরুদ্ধে সরব হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, অনুপ্রবেশ আটকাতে অসম সরকার সহযোগিতা করছে কেন্দ্রের সঙ্গে। অসহযোগিতা করছে পশ্চিমবঙ্গ। একটি রাজ্যে গিয়ে প্রতিবেশী রাজ্যের প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তোলাকেও প্রশাসনিক অসৌজন্য বলে মনে করে একটি মহল।
কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় সড়কগুলির টোলের পরিমান প্রায় দেড়গুণ বৃদ্ধি করেছে বলে খবর। এদিন সেই ব্যাপারেই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছিল। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টোল, ঢোল কিছুই বাদ দিচ্ছে না।
এদিন করোনা নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অফিসার এবং চিকিৎসকেরা আছেন বলে তিনি গোড়াতেই বলে দেন, রাজনৈতিক প্রশ্ন না করতে। টোল বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রশ্নটির তিনি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে জবাব দেন। তবে অল্প কথায় প্রতিক্রিয়া দিয়েই সাংবাদিক বৈঠকের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেন তিনি।