
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত বাংলা সফরে আসছেন। তাঁর কর্মসূচির উপর কড়া নজর রাখার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee-RSS)। সেই সঙ্গে বললেন, ভাগবত এলে তাঁকে যেন যথাযথ আপ্যায়ণও করা হয়। যা রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এক এক করে বিভিন্ন থানার আইসিদের দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করছিলেন। তাঁদের এলাকায় কী কী সমস্যা তা জানতে চাইছিলেন মমতা। এই করতে করতেই কেশিয়াড়ির আইসিকে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “১৭-২০ তারিখ আরএসএস প্রধান আসছেন তো। কী করতে আসছেন? নজর রাখবেন যেন দাঙ্গাটাঙ্গা না করে (Mamata Banerjee-RSS)!”
নিজামে হুলুস্থূলের এক বছর, কেন্দ্রীয় এজেন্সির নিরাপত্তা নিয়ে স্পষ্ট বার্তা সুপ্রিম কোর্টের
এরপরেই মমতা বলেন, “একটু ফল-মিষ্টিও পাঠিয়ে দেবেন। যাতে মনে না হয় আমরা অতিথিদের আপ্যায়ণ করি না!” সেইসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করতে যাবেন না!”
এই পশ্চিম মেদিনীপুরে, এই কেশিয়াড়িতেই আরএসএস-এর গোপন শিবির নিয়ে উনিশের শেষ দিকে জেলা প্রশাসনের উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা। সেই সময়ে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা নাগপুরের ঘরের ছেলে অর্জুন রাম মেঘওয়াল এসে কেশিয়াড়িতে কয়েকদিন থেকে গিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সেই থাকা এবং শিবির করা নিয়ে জেলা প্রশাসন কিছু জানতেও পারেনি। যাকে জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবেই দেখেছিল নবান্ন।
এবার সঙ্ঘপ্রধান আসার অব্যবহিত আগে কার্যত কেশিয়াড়ির আইসি ও জেলা পুলিশকে সতর্ক করে দিলেন মমতা। বোঝাতে চাইলেন, ওরা কী করছে তাতে যেন প্রশাসনের নজর থাকে। অর্জুন রামের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়।
এমনিতে গত কয়েক বছর ধরে আরএসএস-এর প্রতি বীতশ্রদ্ধ মমতা। এর আগেও একাধিকবার তিনি বলেছেন, “আমি আগে জানতাম এরা মানুষের সেবা করে। কিন্তু এরা যে মানুষে মানুষে এমন ভাগাভাগি করে আমি জানতাম না। কী ডেঞ্জারাস!” এবার স্বয়ং সরসঙ্ঘপ্রধান আসার আগে পুলিশকে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে প্রশাসনের একটা সূত্রের দাবি, ব্যাপারটা তা হয়তো নয়। একুশের নির্বাচন-উত্তর সময়ে বিজেপি-আরএসএসের উপর রাজ্যের অনেকেরই ক্ষোভ-রাগ উগরে দিচ্ছেন। এদিন খোলা মঞ্চে থানার আইসিকে নির্দেশ দিয়ে দলকেও বার্তা দিতে চেয়েছেন দিদি। যাতে আরএসএসের সম্মেলনের ওখানে তৃণমূলের কেউ গোল না পাকায়। কারণ, তাতে জাতীয় স্তরে ভুল বার্তা যাবে। বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোঝাতে চেয়েছেন, কেউ শান্তিপূর্ণ ভাবে সভা-অনুষ্ঠান করলে রাজ্য বাধা দেবে না। তবে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হলে বরদাস্ত করা হবে না।