
দ্য ওয়াল ব্যুরো : মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোট সরকারের। আট মাস আগে রাজ্যের বিধান পরিষদে মনোনয়নের জন্য সরকার রাজ্যপালের কাছে ১২ জনের নামের তালিকা পাঠায়। কিন্তু রাজ্যপাল দীর্ঘদিন ধরে এসম্পর্কে সিদ্ধনাত নেননি। তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে নতুন করে রাজ্যপালের বিরোধ শুরু হয়।
এরপর নাসিকের এক বাসিন্দা বম্বে হাইকোর্টে আর্জি জানিয়ে বলেন, রাজ্যপালকে ওই নামের তালিকা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হোক। শুক্রবার হাইকোর্ট বলে, রাজ্যপাল একটা যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে নামগুলি অনুমোদন করতে পারেন। বাতিলও করতে পারেন। কিন্তু সাংবিধানিকভাবে তাঁকে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।
বম্বে হাইকোর্ট এই রায় দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যপাল যান দিল্লিতে। সেখানে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাজভবন থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, রাজ্যপাল অমিত শাহের সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করতে গিয়েছিলেন।
বিধান পরিষদে ১২ জনের সদস্য পদের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। নভেম্বর মাসে উদ্ধব ঠাকরে সরকার ১২ জনের নাম রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছিল। সরকারের বক্তব্য, রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নিতে অনির্দিষ্টকাল সময় নিতে পারেন না।
মহারাষ্ট্রে গত বিধানসভা ভোটের পরে রাজ্যপাল বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ও এনসিপি ভেঙে বিজেপির দিকে যাওয়া বিধায়ক অজিত পাওয়ারকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন। পরে অজিত পাওয়ার ফের পুরানো দলে ফিরে যান। বিধানসভায় গরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হন দেবেন্দ্র। সরকার গড়েন শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উদ্ধব ঠাকরে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির তীব্র সমালোচনা করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে সরকার গড়তে ডেকে রাজ্যপাল নিন্দনীয় কাজ করেছিলেন। আগে কোনও রাজ্যপাল এমন করেননি।
এর পরেই তিনি বলেন, রাজ্যপাল যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছিলেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বিজেপির ঔদ্ধত্য ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের জন্যই তাদের প্রাক নির্বাচনী জোট ভেঙে গিয়েছে।
সনিয়া বলেন, “আমাদের তিন দলের জোট ভেঙে দেওয়ার জন্য সবরকম চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। সেখানে মোদী-শাহ সরকারের মুখোশ খুলে গেল। আপনাদের একটা ব্যাপারে নিশ্চিত করতে চাই। বিজেপিকে হারানোর জন্য আমাদের তিন দল ঐক্যবদ্ধ।”