Latest News

মহারাষ্ট্রে হঠাৎ তৎপর বিজেপি, বিধায়কদের মুম্বইয়ে তলব, সরকার গড়া নিয়ে জল্পনা

দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) দলত্যাগ বিরোধী আইন এখনই কার্যকর হবে না বিদ্রোহী বিধায়কদের বিরুদ্ধে। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১১ জুলাই। ততদিন পর্যন্ত বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে ফ্লোর টেস্ট করা যাবে না।

আজ দুপুরে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় জানার পর উদ্ধব (Uddhav Thackrey)বিরোধী শিবিরের তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছে। হঠাৎ করেই প্রকাশ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিজেপি (BJP)। আগামী পরশু বুধবার দলের সব বিধায়ককে মুম্বই চলে আসতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, শিন্ডে (Eknath Shinde) শিবিরের বিধায়করা সুপ্রিম কোর্টের রায় জানার পর ঠিক করেছেন ১২ জুলাই পর্যন্ত তাঁরা গুয়াহাটির হোটেলেই থাকবেন। ১১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে মামলার ফের শুনানি হওয়ার কথা।

তবে বিজেপির তৎপরতা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। আজ সন্ধায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসের বাড়িতে বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে আলোচনা হওয়ার পর বিধায়কদের মুম্বই চলে আসার নির্দেশ জারি হয়।

গেরুয়া শিবিরের এই সিদ্ধান্ত থেকে দুটি সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। এক. বিজেপি সরকার গড়ার দাবি নিয়ে বিধায়কদের রাজ্যপালের কাছে হাজির করবে। তাদের নিজেদের বিধায়ক সংখ্যা ১০৬ জন। এছাড়া কয়েকটি ছোট দল ও নির্দল মিলিয়ে তাদের সঙ্গে আছে ১১৩ জনের সমর্থন। অন্যদিকে, শিবসেনার (Shiv Sena) ভাঙনের পর সরকার পক্ষের বিধায়ক সংখ্যা তার থেকে কমে গিয়েছে। এনসিপি ও কংগ্রেসের সম্মিলিত বিধায়ক সংখ্যা ৯৭। শিবসেনার ৫৪ বিধায়কের ৪২ জন গুয়াহাটিতে। সেখানে না যাওয়া বিধায়কদেরও সকলে উদ্ধবের সঙ্গে নেই বলে খবর।

বিজেপির বিধায়কদের মুম্বই তলবের পিছনে আরও একটি সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা হচ্ছে। তা হল, উদ্ধব শিবির যাতে বিজেপির বিধায়কদের ভাঙাতে না পারে সে জন্য তাদের হোটেলে রাখা হতে পারে।

তবে প্রথম সম্ভাবনাই বেশি। অর্থাৎ বিজেপি সরকার গড়ার দাবি জানাবে।

সুপ্রিম কোর্টের ফ্লোর টেস্ট সংক্রান্ত আদেশের পর অনেকের ধারণা হয়েছিল বিদ্রোহী শিবির এবার দ্রুত বিকল্প সরকার গড়ার তোড়জোড় শুরু করতে পারে। তাতে তারা কম করে ১১ জুলাই পর্যন্ত সময় পেয়ে যাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য। এখনও পর্যন্ত তারা সরকার গড়ার দাবি জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দেয়নি। সরকার বিজেপির সমর্থনে কিংবা বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে হোক, সময় অনেকটাই মিলবে। তবে সুপ্রিম কোর্টে মামলা যাওয়ায় রাজ্যপাল এবং স্পিকার কোনও পদক্ষেপ করবেন কিনা সেটা ভাবনার বিষয়। যদিও তাঁদের হাত পা বেঁধে দেয়নি সর্বোচ্চ আদালত। ফলে রাজ্যপাল যদি নিশ্চিত হন, উদ্ধব সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে তাহলে তিনি প্রথমে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পদত্যাগের পরামর্শ দিতে পারেন। তিনি পরামর্শ না শুনলে রাজ্যপাল তাঁকে বরখাস্ত করে নতুন সরকারের শপথের আয়োজন করতে পারেন। শিবসেনার বিদ্রোহীরা ১২ জুলাই পর্যন্ত গুয়াহাটিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এখন অনেকের ধারণা সরকার গড়ার দাবি বিজেপি জানাতে পারে।

বিদ্রোহী মন্ত্রী তথা বিধায়ক একনাথ শিন্ডের মামলায় বিধানসভার কার্যনির্বাহী স্পিকার নরহরি সীতারাম জিরয়ালকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তাঁর বক্তব্য জানতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

স্পিকারের দুটি আদেশ নিয়ে মামলা হয় সর্বোচ্চ আদালতে। এক, তিনি একনাথ শিন্ডে সহ ১৫ জন বিদ্রোহী বিধায়ককে নোটিস পাঠিয়ে জানতে চেয়েছেন, কেন তাঁদের সদস্য পদ খারিজ করা হবে না। দুই, কেন তিনি অজয় চৌধুরিকে শিবসেনার পরিষদীয় দলনেতা ঘোষণা করেছেন।

এর আগে উদ্ধব ঠাকরের শিবির ডেপুটি স্পিকার তথা কার্যনির্বাহী স্পিকারকে চিঠি দিয়ে শিন্ডে এবং আরও ১৫ জন বিধায়কের সদস্য পদ খারিজের সুপারিশ করেন। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করেছেন ডেপুটি স্পিকার।

এদিকে, ডেপুটি স্পিকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েও চিঠি জমা পড়েছে শিন্ডে গোষ্ঠীর তরফে। আজ সর্বোচ্চ আদালত সব পক্ষের বক্তব্য শুনে মহারাষ্ট্র সরকারকে বলেছে সংশ্লিষ্ট সকলের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে।

You might also like