
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়োগ দুর্নীতি (SSC recruitment) মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly) যে সব বাছা বাছা পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছেন তা এখন বাংলা রাজনীতি তো বটেই সোশাল মিডিয়ায় মিমেরও খাদ্য হয়ে উঠেছে। পর্যবেক্ষণে কখনও তিনি বলেছেন, দালাল মুখপাত্র গোছের শব্দ, কখনও বলেছেন- আরও ধেঁড়ে ইঁদুর বেরোবে, আবার কখনও বলেছেন, ঢাকি সহ বিসর্জন দিয়ে দেব।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণে শব্দচয়ন ও ভাষার প্রয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আবার অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঠারেঠোরে বোঝাতে চেয়েছেন, বিচারপতিরাও আইনের উর্ধ্বে নন।
বুধবার আবার কুণাল ঘোষ (kunal Ghosh) একটি টুইট করে জল্পনা বাড়িয়েছেন। কুণাল টুইটে লিখেছেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলুক। অপরাধীরা শাস্তি পাক। যদি কেউ সব জানেন, ‘মাথা’ চেনেন, ‘ধেড়ে ইঁদুর’ জানেন বলে ভাব দেখিয়ে প্রচার চান, তাঁকে অবিলম্বে সেই মামলায় সাক্ষী হিসেবে তদন্তে ডেকে পাঠানো হোক।’
কুণালের কথায়, ‘যিনি সব জানেন, তিনি শুধু সংলাপ দিয়ে মেগাসিরিয়াল চালাবেন কেন? আসুন তদন্তে।’
এর আগেও একদিন দলীয় তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে বিচারব্যবস্থার উদ্দেশে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন কুণাল। তৃণমূল মুখপাত্র বলেছিলেন, নিজেকে অরণ্যদেব ভাবলে দুর্ভাগ্যজনক। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু কেউ যদি তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছা তথা উইশ লিস্ট পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে প্রচার পেতে চান, তা হলে তা দুর্ভাগ্যের বৈকি।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এমন নয় যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়ে গিয়েছে বা খুব শিগগির তা হবে। এমনকী, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে এও বলেছেন যে প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে কিনা তা তাঁর জীবদ্দশায় তিনি দেখে যেতে পারবেন কিনা সংশয় রয়েছে। কিন্তু ঘটনা হল, রায় ঘোষণা না হলেও রোজ, নিয়মিত ও লাগাতার যে সব পর্যবেক্ষণ আদালত জানাচ্ছে তা রাজনৈতিক ভাবে অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছে শাসক দলকে। এই সব পর্যবেক্ষণের কারণে জনমানসে বিচারপতির গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা দুই বেড়েছে। এক শ্রেণির মানুষ তাঁকে ভগবান জ্ঞান করতে শুরু করেছেন। আবার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে তা অক্সিজেন যোগাচ্ছে। কিন্তু একইভাবে তা বিঁধছে শাসক দলের গায়ে। সার্বিক এই পরিস্থিতিতেই অনেকে প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছেন।
এক সময়ে টুজি কেলেঙ্কারি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এরকমই পর্যবেক্ষণ দিতে শুরু করেছিল। তখন প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছিল কংগ্রেস। কারণ, টুজি মামলায় এ রাজা বা কানিমোজির বিরুদ্ধে শেষমেশ কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি ঠিকই, কিন্তু আদালতের পর্যবেক্ষণ রাজনৈতিক ভাবে তাঁদের ক্ষতি করেছিল বলে মনে করে কংগ্রেস।