
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে মাস্ক (Covid) পরার অভ্যাস ছেড়েছেন বহু মানুষ। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। আর মাস্কে ফিরতে চাইছেন না তাঁরা। ফলে করোনা সংক্রমণ নিয়ে চিন্তা বাড়ছে।
বর্ষা শুরু হতেই ঘরে ঘরে খুসখুসে কাশি, হালকা ঠাণ্ডা–জ্বর। করোনা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে সংক্রমিত হচ্ছেন অনেকেই। যারমধ্যে উপসর্গহীন সংক্রমিতের সংখ্যাই বেশি। একথা সকলেরই জানা যে, করোনা সংক্রমণ হলে মূলত রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। ফলে শরীরে অন্য রোগব্যাধি থাকলে বা কোনও বড় অসুখ না থাকলে তেমন ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু সংক্রমণ রুখতে মাস্ক পরতেই হবে। গাদাগাদি ঠাসাঠাসি করা যাবে না। কিন্তু বাস, ট্রেন, মেট্রো, সরকারি দফতর—সর্বত্রই শিকেয় উঠেছে কোভিডবিধি। এমনকী পুলিশ, পুরসভার কর্মচারীদের মধ্যেও মাস্কের বালাই নেই। সরকারি-বেসরকারি অফিসকাছারিতেও করোনা (Covid) বিধির বালাই নেই।
শুক্রবার বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে দেখা গেল দশজনের মধ্যে মাত্র দু’জন মাস্ক পরেছেন। ধর্মতলা মেট্রো স্টেশনের সামনে সনৎ ঘোষ নামে এক প্রবীণ যাত্রী বললেন, ‘সবকিছু কিছুটা স্বাভাবিক হতেই মাস্ক পরার অভ্যেস নষ্ট হয়েছে। কিন্তু একটু কষ্ট হলেও ফের মাস্কে ফিরতে হবে আমাদের। রেল ও মেট্রোর উচিত ফের মাস্ক ও স্যানিটাইজেশনে জোর দেওয়া।’
করোনা দিন দিন বাড়ছে, কলকাতা মেডিক্যালের চার পড়ুয়া ভর্তি বেলেঘাটা আইডিতে
স্বাস্থ্য দফতরের গত বুধবারের হিসেব বলছে সংক্রমণ (Covid) ২৯৫ থেকে ৭০০ ছাড়িয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হল, রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৯৫। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হয়েছে ৭৪৫। পজিটিভিটি রেট তথা সংক্রমণের হারও বেশি। রাজ্যে এখন করোনা পজিটিভ রোগীর মোট সংখ্যা ২০ লাখের বেশি।। কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার নতুন করে সংক্রমণের গ্রাফ বাড়ছে।
শিয়ালদহ স্টেশনে দক্ষিণ শাখার নিত্যযাত্রী তন্ময় ঘোষাল বললেন, ‘সবাই ভেবেছে করোনা চলে গেছে। তাই আর মাস্ক, স্যানিটাইজারের তোয়াক্কা করছে না কেউ। কিন্তু করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে আরম্ভ করলে ফের নাইট কার্ফু, লোকাল ট্রেনে কোপ পড়বে। সেদিকে কারও হুঁশ নেই। তখন সমস্যায় পড়ব আমরা।’
এদিন কলকাতা পুরসভার পাশে এলিট সিনেমা হলের সামনের রাস্তায় পুর–কর্মীদের একটি সমাবেশ ছিল। সেখানে বহু মানুষ ছিলেন। করোনাগ্রাফ বাড়ার বিষয়ে একজনের অভিযোগ, এতদিন গরমের দোহাই দিয়ে স্কুল বন্ধ করেছিল সরকার। এবার বর্ষা শুরু হয়েছে, তাই করোনার দোহাই দিয়ে স্কুল বন্ধ করার ফন্দি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৭ জুন, সোমবার থেকে স্কুল খুলছে। এই সময় করোনা (covid) বাড়ছে, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার উপদ্রবও রয়েছে। কাজেই স্কুল খোলা হলে পড়ুয়াদের শরীর-স্বাস্থ্যর কথা ভেবে কী কী দিকে সতর্কতা নেওয়া হবে সে নিয়ে সমস্ত জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর।
বালিগঞ্জ স্টেশনে সুনন্দ মণ্ডল নামে এক যাত্রীর দাবি,পরীক্ষা করালে সকলেরই করোনা ধরা পড়বে। তাঁর কথায়, ‘আর কেউ করোনার ভয় পাচ্ছে না। আমার একবার করোনা হয়েছিল। সাধারণ ঠাণ্ডা জ্বরের মতোই। তাই আর ভয় পাচ্ছি না। যা হয় হবে। তবে সরকার আবার মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হলে পরব।’