Latest News

বিচারপতি নিয়োগ-বিবাদে মোদীর আইনমন্ত্রীর মুখে এবার জাতের অঙ্ক

দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাইকোর্ট (High Court) ও সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের চলমান সংঘাত ফের উসকে দিলেন আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু (Kiren Rijiju)। আজ রাজ্যসভায় তিনি বলেন, সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ তাঁকে বিচারপতি নিয়োগের চলতি ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার কথা বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, চলতি ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। কারণ, বর্তমান ব্যবস্থায় যোগ্য বিচারপতি বাছাইয়ে পারদর্শিতার অভাব আছে। এছাড়া, চলতি ব্যবস্থায় বিচারপতিদের (judges) মধ্যে সমাজের সব বর্গের প্রতিনিধিত্ব থাকছে না।

রিজিজু এতদিন বিচারপতি নিয়োগ ঘিরে আপত্তি সম্পর্কে সরকারের অসন্তোষের কথাই বলে আসছিলেন । সরকারের আপত্তির কারণ, বিচারপতি নিয়োগে বিশেষ আয়োগ তৈরির জন্য সংসদে পাশ হওয়া আইন সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দিয়েছে। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে কেন্দ্রের আইনমন্ত্রকের সংঘাত রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকার নিন্দা করায় তাঁর সমালোচনায় সরব হন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ধনকড় প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি তথা ওই দলের সংসদ নেত্রীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সাংবিধানিক পদে আসীন ব্যক্তির সমালোচনা করা অনুচিত। যদিও সনিয়া এবং ধনকড় কেউই কারও নাম মুখে আনেননি।

এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আইনমন্ত্রকের বিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সর্বোচ্চ আদালত বিচারপতির শূন্য পদ পূরণ সংক্রান্ত মামলায় রিজিজুর বক্তব্যের নিন্দা করেছে। বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়ামের পাঠানো প্রস্তাবে কেন্দ্র সায় দিতে কেন বাড়তি সময় নিচ্ছে তা জানতে চেয়ে আদালতের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সরকারকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরান। সরকার বনাম আদালতের মধ্যে সংঘাতের এমন নজির বিরল।

কলেজিয়াম হল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে মাথায় রেখে প্রবীণ বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি। সেই কমিটি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে নাম সুপারিশ করে থাকে সরকারের কাছে। ১৯৯৩ সালের আগে পর্যন্ত নাম চূড়ান্ত করার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত নিত বিচারপতিদের কমিটি। সেই বছর থেকে নতুন নিয়ম চালু হয়। সুপ্রিম কোর্টেরই একটি রায় মেনে চলা নয়া কলেজিয়াম ব্যবস্থায় বিচারপতি নিয়োগে আর কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত দেওয়ার সুযোগ নেই। কেন্দ্রের আইনমন্ত্রকের কাজ হল, কলেজিয়াম পাঠানো তালিকা মেনে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা।

চলতি এই ব্যবস্থা বাতিল করতে চেয়েই নরেন্দ্র মোদী সরকার সংসদে আইন পাশ করে বিচারপতি নিয়োগ আয়োগ তৈরির পথে অগ্রসর হয়। কিন্তু বাদ সাধে সর্বোচ্চ আদালতই। ওই আইনকে অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালত।

আজ কিরেন রিজিজু রাজ্যসভায় বলেন, বহু মানুষ বর্তমান ব্যবস্থায় অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, দুটি মৌলিক বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। একটি হল, চলতি ব্যবস্থায় পারদর্শিতার অভাব। অর্থাৎ যোগ্য বিচারপতি নিয়োগ হচ্ছে না, বলতে চেয়েছেন তিনি।

দ্বিতীয় হল, বিচারপতিদের মধ্যে সব বর্গের প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। অনেকেই মনে করছেন, কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি তোলায় সরকারের বিরুদ্ধে যখন বিচার ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, রিজুজি তখন কৌশলে সমাজের নিম্নবর্গের প্রতি সদয় হওয়ার চেষ্টা করলেন। বোঝাতে চাইলেন, সরকারের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করা হলে বিচারপতিদের মধ্যেও সমাজের নিম্নবর্গের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।

কলকাতা-বারাণসী ৭ ঘণ্টায়, এক্সপ্রেসওয়ে তৈরিতে জমি অধিগ্রহণে সায় নবান্নের

You might also like