
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একটা উপনির্বাচনকে নিজের সাংগঠনিক দক্ষতার অগ্নিপরীক্ষা ধরে নিয়েছিলেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেই পরীক্ষায় শুভেন্দু কার্যত লেটার পেয়ে পাশ করেছিলেন। তাঁকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন দিদিও। কিন্তু যাঁকে সেদিন শুভেন্দু তৃণমূলের টিকিটে জিতিয়েছিলেন সোমবার তাঁকেই ছেঁটে ফেলল কালীঘাট।
খড়্গপুর পুরসভার (Kharagpur Municipalty) চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে (Pradip Sarkar) ওই পদ থেকে অপসারিত করেছে তৃণমূল। উনিশ সালে খড়্গপুর সদরে বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির হাত থেকে আসন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন শুভেন্দু। প্রার্থী ছিলেন প্রদীপ।
ফিরে দেখা সেই ভোট
ষোলোর বিধানসভা ভোটে খড়গপুর সদরে জিতেছিলেন দিলীপ ঘোষ। রেলশহরের রাজনীতির কিংবদন্তি কংগ্রেস নেতা জ্ঞান সিং সোহন পালকে হারিয়েছিলেন দিলীপ। সেবার তিনে ছিল তৃণমূল।
উনিশের লোকসভায় মেদিনীপুরে প্রার্থী হন দিলীপ। ওই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই একটি বিধানসভা হল খড়্গপুর সদর। দিলীপ লোকসভা ভোটে খড়গপুর থেকে বিশ হাজারের লিড পেয়েছিলন।
সাংসদ হওয়ার পর দিলীপকে বিধায়ক পদ ছাড়তে হয়। ফলে উপনির্বাচন হয় খড়্গপুর সদরে। তৃণমূল খড়্গপুর জেতার দায়িত্ব দেয় শুভেন্দুকে।
ওই উপনির্বাচনে শুভেন্দু কার্যত আদাজল খেয়ে নেমেছিলেন। ভোটের দিন বিকেলেই মমতাকে শুভেন্দু রিপোর্ট দেন, লোকসভার নিরিখে বিশ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকা ম্যানেজ করে আরও বিশ হাজারে জিতবেন তৃণমূলপ্রার্থী। খড়্গপুরে ফুটবে জোড়াফুল। জানা গিয়েছিল সেই কথা শুনে শুভেন্দুর উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, “তোর মুখে ফুল চন্দন পড়ুক।”
শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়। খড়্গপুর উপনির্বাচনের দিন দুপুরে সাংবাদিকদেরও শুভেন্দু সে কথা জানিয়েছিলেন প্রত্যয়ের সঙ্গে। ভোটের ফল বেরোতে দেখা যায় শুভেন্দু যা বলেছিলেন তাই মিলে গিয়েছে।
ওই প্রথম তৃণমূল খড়্গপুর সদর জিতেছিল। আর কখনও সেখানে জিততে পারেনি তারা। একুশে প্রদীপ সরকার হেরেছিলেন বিজেপির হিরণের কাছে। দেখা গিয়েছিল উনিশের নভেম্বরে শুভেন্দুর নেতৃত্বে খড়্গপুর জয়ের পর সেবারই প্রথম কালীঘাটে ভাইফোঁটায় ডাক পড়েছিল। কাকতালীয় হল, সেটা ছিল শুভেন্দুর প্রথম কালীঘাটে ভাইফোঁটার নিতে যাওয়া।
পুর নির্বাচনে খড়্গপুর জিতে তৃণমূল একুশের বিধানসভায় হারা প্রদীপকেই চেয়্যারম্যান করেছিল। এদিন তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এখন প্রদীপ শুধুই কাউন্সিলর। সামান্য একটি ওয়ার্ডের নেতা। এবার তিনি কী করেন সেটাই দেখার।
তৃণমূল পুরপ্রধানকে সরিয়ে দিল কালীঘাট, মমতা-অভিষেকের কড়া বার্তা দলকে