
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বর্তমানে উত্তাল রাজ্য। তারমধ্যেই উচ্চশিক্ষার (higher studies) ক্ষেত্রেও জালিয়াতির (Fraud) ঘটনা সামনে এল। সম্প্রতি অন্য গবেষকের (researcher) থিসিস (thesis) নকল (copy) করে পিএইচডি (PHD) ডিগ্রি পাওয়ার অভিযোগে অপসারণ (suspended) করা হল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Kalyani University) ডিনকে (DEAN)।
অভিযুক্তের নাম দেবপ্রসাদ শিকদার। তিনি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক। গত দু’বছর ধরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অনুষদের ডিন পদের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি পান ওই অধ্যাপক। ‘এ কম্পারেটিভ স্টাডি অফ টিচিং বায়োলজি ইন ডিফারেন্ট কোর্সেস অ্যাট হায়ার সেকেন্ডারি লেভেল ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামে একটি থিসিস তিনি জমা দিয়েছিলেন।
তিনি যে আসলে অন্যের থিসিস নকল করে ডিগ্রি পেয়েছেন, সেই অভিযোগে আগেই সরব হয়েছিলেন অধ্যাপক শান্তিনাথ সরকার। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালে স্বদেশরঞ্জন সামন্ত নামে অধ্যাপক ‘এ কম্পারেটিভ স্টাডি অফ টিচিং ফিজিক্স ইন ডিফারেন্ট কোর্সেস অ্যাট দা হায়ার সেকেন্ডারি লেভেলস ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’ শীর্ষক একটি থিসিস আগেই জমা দিয়েছিলেন পরীক্ষকদের কাছে। তা মূল্যায়িতও হয়েছিল। সেই থিসিসটিই হুবহু নকল করে নিজের থিসিসটি লিখেছেন অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদার, এমন অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আরটিআই করেছিলেন শান্তিনাথবাবু। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, তাতে কর্ণপাত করেনি কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, এই অভিযোগ জানানোর সময় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক অলোককুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি থিসিস নকলের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক চাপের মুখে তদন্ত বন্ধ করে দিতে হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। তার প্রায় দুই দশক পর আবার নকল থিসিসের অভিযোগ চাগাড় দিয়ে ওঠে। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই কমিটির রিপোর্টে জানা যায়, অধ্যাপক স্বদেশরঞ্জন সামন্তের থিসিসের সঙ্গে প্রায় পুরোটাই মিলে গেছে দেবপ্রসাদ শিকদারের জমা দেওয়া থিসিস, যার ভিত্তিতে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি পেয়েছিলেন। থিসিস দুটির শিরোনামও প্রায় পুরোটাই এক, শুধু দেবপ্রসাদবাবুর থিসিসের শিরোনামে ‘ফিজিক্স’-এর বদলে ‘বায়োলজি’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে সোমবার ঘটনার বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করে তদন্ত কমিটি।
এরপরেই ডিন পদ থেকে অপসারিত করা হয় অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদারকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, নতুন অর্ডার না আসা পর্যন্ত শিক্ষাতত্ত্ব বিভাগের অনুষদের ডিন পদে আপাতত থাকবেন না দেবপ্রসাদ শিকদার। তবে শুধু অপসারণই নয়, তাঁকে শাস্তি দেওয়ারও দাবি উঠেছে ইতিমধ্যে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত অধ্যাপক। তার দাবি, এভাবে অপসারণ করার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে নেই, তা একমাত্র উচ্চশিক্ষা দফতরই ঠিক করতে পারে। এখন এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন সকলে।
পুলিশ যে উভলিঙ্গ হয় জানতাম না! আইপিএস আকাশকে কটাক্ষ সুকান্তর