Latest News

নয়াদিল্লির হুঁশিয়ারি পরোয়া না করে ফের কৃষক আন্দোলনের পাশে ট্রুডো, কানাডার ‘দ্বিচারিতা’ও স্পষ্ট

দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজধানীর উপকণ্ঠে যে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছে তাকে ক’দিন আগেই পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

ভারতের ঘরোয়া বিষয়ে বাইরের কোনও দেশের নাক গলানো কোনওকালেই বরদাস্ত করেনি নয়াদিল্লি। ট্রুডোর সেই অবস্থানকে ভর্ৎসনা করে শুক্রবার তাই নয়াদিল্লির কানাডার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। কৃষক আন্দোলন নিয়ে কানাডার উস্কানি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গুরুতর ক্ষতি করতে পারে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু এ ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে শনিবার জাস্টিন ট্রুডো ফের বলেন, “গোটা পৃথিবীতে যে কোনও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সমর্থন করে কানাডা।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নয়াদিল্লি হুঁশিয়ারি দিয়ে এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গুরুতর প্রভাব পড়বে। তার জবাবেও ঘাড় ঝাঁকিয়ে একই জবাব দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। যার অর্থ পরিষ্কার। ভারতের অসন্তোষকে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না কানাডা।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, ট্রুডোর এই অবস্থানে আন্দোলনরত কৃষকদের একাংশ খুশি। কিন্তু ভারতের ঘরোয়া রাজনীতিতে কংগ্রেসের মতো সর্বভারতীয় দলও কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কথা নিয়ে নাচানাচি করছে না। কারণ, নয়াদিল্লির বিদেশনীতির মূল মন্ত্রই হল— ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে ঘরোয়া কোনও দ্বন্দ্ব বা অশান্তি নিজেরাই মীমাংসা করে নিতে পারে নয়াদিল্লি। বাইরের কোনও শক্তি বা দেশের সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকারই নেই।

শুধু ভারত কেন, যে কোনও সার্বভৌম দেশেরই এটা স্বাভিমানের ব্যাপার। বরং নয়াদিল্লির কূটনীতিকরা বলছেন, কৃষক স্বার্থ নিয়ে জাস্টিন ট্রুডোর ভয়ঙ্কর দ্বিচারিতাও এখানে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। ভারতের কৃষকদের সরকার কৃষি ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেয়। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বৈঠকে কানাডা নয়াদিল্লির এই অবস্থানের বরাবর বিরোধিতা করেছে। ২০১৮-১৯ বিপণন বর্ষে ভারত ধান চাষীদের ভর্তুকি দিয়েছিল। সে জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ‘পিস ক্লস (শান্তি ধারা)’ মতে তা করেছিল ভারত। কিন্তু তাতেও আপত্তি করেছিল কানাডা। কেবল তা নয়, প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান যোজনা নিয়েও ডব্লিউ টি ও-তে আপত্তি তুলেছে কানাডা। ওই যোজনা খাতে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষীদের বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা দেয় কেন্দ্রের সরকার।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে ট্রুডো কেন এত দরদী?

এটা ঠিক যে কানাডা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে। কিন্তু অনেকের মতে, এও ঠিক যে ঘরোয়া রাজনীতির কারণেই ট্রুডো তা করছেন। কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতের সংখ্যা কম নয়। তাঁদের মধ্যে সিংহভাগ পাঞ্জাব ও হরিয়ানার বাসিন্দা। কানাডার রাজনৈতিক ব্যবস্থাতেও পাঞ্জাবি সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। হতে পারে সেই কারণেই কৃষক আন্দোলন নিয়ে ট্রুডোর এতো উদ্বেগ। এবং সেই রাজনৈতিক স্বার্থেই নয়াদিল্লির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ককেও এখন পাশে সরিয়ে রাখতে চাইছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।

You might also like