
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এ যেন এভারেস্ট সমান দুর্নীতির মারিয়ানা খাদ ছোঁয়ার বার্তা। প্রতিদিন সেটাই স্পষ্ট করে দিচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। দু’দিন আগে ২০১৬ সালের টেট দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) তদন্তকারীর অফিসার সোমনাথ বিশ্বাসকে সরিয়ে দিয়েছিলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার সেই তিনিই নির্দেশ দিলেন, সোমনাথ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।
তদন্তে কালক্ষেপ নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে এদিন আরও কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে সিবিআইকে তাঁর নির্দেশ, সোমনাথ বিশ্বাসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
সিবিআই অফিসাররা যে সবাই সৎ নন, বা তাঁদের ভূমিকা যে কাচের মতো স্বচ্ছ নয় সেই প্রমাণ আগেও মিলেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সেটাই যেন আরও একবার বেরিয়ে পড়ল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, তদন্তকারী অফিসার-সহ গোটা টিমের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের জন্যই ২০১৬-র টেট দুর্নীতি মামলায় এত সময় লাগছে। নইলে যাঁদের ধরে তদন্ত করার কথা তাঁরা সবাই জেলে রয়েছেন। সিবিআই চাইলেই পারে সবটা খুঁজে বের করতে।
বামফ্রন্ট সরকারের শেষ দিকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তদন্ত করছিল সিবিআই। সেই মামলাগুলি বাংলার রাজনীতির ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে রয়েছে। সেগুলি হল—নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনা, সিঙ্গুরে তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ এবং রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যু। ঘটনাচক্রে এই তিন মামলাতেই তদন্তকারী অফিসার ছিলেন পার্থসারথি বসু। ২০০৮ সালে পার্থসারথিকে উল্টোডাঙার ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা। উদ্ধার হয়েছিল নগদ ১৪ লক্ষ টাকা। সোমনাথ বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ যেন সেই স্মৃতিকেই উস্কে দিয়েছে।
এদিনের শুনানিতে একটি সংস্থার নাম উল্লেখ করেও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এস বসু রায় চৌধুরী সংস্থাটির সঙ্গে মানিক ভট্টাচার্যের কীসের এত প্রেম? জানা গিয়েছে, এই সংস্থাকেই ওএমআর শিটের বরাত দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তখন মানিক ভট্টাচার্যই ছিলেন পর্ষদ সভাপতি।
তবে সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ গোটা তদন্তে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকাকেই প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল বলে মত অনেকের।
সিবিআইয়ের অফিসারদের সম্পত্তির হিসাব চাওয়ার হুঁশিয়ারি বিচারপতির, প্রধানমন্ত্রীকেও চিঠি