
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অনেক দিন হল পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ানের ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারোর হাতে কোনও ছবি নেই। জন ক্রিস্টোফার ডেপ তথা জনি ডেপ এক প্রকার এখন বেকার। বরং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের (Johnny Depp Amber Heard) সঙ্গে আইনি লড়াই (Defamation Case) কার্যত এবার হলিউড ড্রামার চেহারা নিয়েছে।
সে নাটকের সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পারস্পরিক দোষারোপ এতটাই কুৎসিত ও কদর্য যে তা নিয়ে হইহই পড়ে গিয়েছে দুনিয়া জুড়ে। এমনকি অ্যাম্বার হার্ড এও অভিযোগ করেছেন, জনি ডেপ (Johnny Depp) তাঁকে লাথি, ঘুষি মারতেও ছাড়েননি। ভদকার বোতল নিয়ে যৌন নির্যাতনও করেছেন ডেপ।

অ্যাম্বার-ডেপ ঘরোয়া ঝগড়া ও অশান্তি, পরস্পরকে কুকথা শোনানো, মাদকাসক্তি, মদ্যপ অবস্থা ইত্যাদি নানা কেচ্ছার কথা এখন প্রায় রোজই বেরিয়ে পড়ছে ভার্জিনিয়ার আদালতে।
মাত্র তিন বছর বৈবাহিক সম্পর্কে ছিলেন ডেপ ও হার্ড। অথচ তার মধ্যেই যেন ঘটনার ঘনঘটা। বস্তুত তাঁদের মধ্যে অশান্তি চলছিল অনেকদিন ধরেই। কিন্তু তার বিস্ফোরণ ঘটে ২০১৮ সালে। ওয়াশিংটন পোস্টে একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন অ্যাম্বার হার্ড (Amber Heard)। আর তাতে জনি ডেপের বিরুদ্ধে মারাত্মক সব অভিযোগ করেছিলেন তিনি। যে ঘচনার পর হলিউডে বলতে গেলে ব্ল্যাকলিস্টেড করে দেওয়া হয় ডেপকে। জ্যাক স্প্যারো দেখেন যে তাঁর মহা সর্বনাশ হয়ে গেছে। আর হারানোর কিছু নেইও। তাই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ডেপ অ্যাম্বার হার্ডের বিরুদ্ধে মিথ্যাচরণের অভিযোগ আনেন। ৫০ মিলিয়ন ডলারের মামলা দায়ের করেন হার্ডের বিরুদ্ধে।
৫৮ বছরের ডেপ অভিযোগ করেন, ঘরোয়া অশান্তির যে কথা অ্যাম্বার হার্ড বলছেন, তা একেবারেই মনগড়া। এর কোনও ভিত্তি নেই। পাল্টা ১০০ মিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ঠুকে দেন হার্ড। তিনি দাবি করেন, জনি ডেপ তাঁর উপর চরম অত্যাচার করতেন। লাথি, ঘুষি মারতেও বাকি রাখেননি।

ব্রিটিশ হাইকোর্টে ইতিমধ্যে একটি মানহানি মামলায় পরাস্ত হয়েছেন ডেপ। সান-সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেছিলেন জনি ডেপ। কিন্তু বিচারপতিরা তাঁদের রায়ে জানিয়ে দেন, প্রাক্তন স্ত্রীর উপর যে ডেপ অত্যাচার করতেন তা অনেকটাই সত্যি বলে প্রমাণিত।
কিন্তু ব্রিটিশ আদালতে যা শুরু হয়েছিল, তার সিক্যুয়েল এখন চলছে মার্কিন আদালতে। যেন হলিউড উঠে এসেছে ভার্জিনিয়াতে। সেই মামলার শুনানির লাইভ স্ট্রিমিংও করা হচ্ছে। ওই মামলার সাক্ষী হিসাবে আদালতে হার্ডের প্রাক্তন অ্যাসিসট্যান্ট কেট জেমসের জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে। তাতে আবার মারাত্মক দাবি করেছেন, জেমস। তিনি ভিডিও জবানবন্দিতে বলেছেন, অ্যাম্বার্ড হার্ড অত্যন্ত নেশা করতেন। তার পর আকন্ঠ নেশা করে ভোর চারটের সময়ে পর্যন্ত অযাচিত টেক্সট মেসেজ পাঠাতেন। বিপরীতে জনি ডেপ ছিলেন নিতান্তই ভদ্র।
কেট জেমসের কথায়, অ্যাম্বার হার্ড বরাবরই ছিলেন নাটুকে। এমনকি রাগারাগি করে হার্ড একবার একাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। তার পর জেমসকে ফোন করে ডেপ সম্পর্কে যা ইচ্ছে গালমন্দ করতে থাকেন। তখন নিউ ইয়র্কে একাই ছিলেন হার্ড। অনেক বুঝিয়ে তাঁকে ঘরে পাঠাতে হয়। জেমস এও অভিযোগ করেছেন, মাইনে বাড়ানোর কথা বললে হার্ড তাঁর মুখে থুতু পর্যন্ত ছিটিয়ে দিয়েছিলেন একবার।
এদিকে হার্ডের আইনজীবীরাও গুচ্ছ অভিযোগ ও প্রমাণ পেশ করেছেন আদালতে। তবে হার্ডের এক বন্ধুকে আদালতে ঢোকা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হার্ডের বন্ধু তথা ওই ব্রিটিশ সাংবাদিক শুনানি চলকালীন প্রথম সারিতে বসে টেক্সট ও টুইট করছিলেন। তা ধরা পড়তেই বিচারপতিরা তাঁকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেন।
সব মিলিয়ে আদালতে সওয়াল-জবাব নিয়ে এখন জমজমাট পরিস্থিতি। ক্যারিবিয়ান নাবিকের বর্তমান-ভবিষ্যৎ দুই-ই যেন দোদুল্যমান।
কাশ্মীর ঘোরার গল্প করছে ছোট্ট কৌশিকা, মুগ্ধ হয়ে শুনছেন সকলে! দেখুন ভিডিও