
দ্য ওয়াল ব্যুরো: না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন প্রখ্যাত সাঁওতালি কবি (Poet) যদুমণি বেসরা (Jadumani Besra)। ‘সাহিত্য আকাদেমি’ পুরস্কার প্রাপ্ত যদুমণির হাত ধরে সাঁওতালি সাহিত্য আরও প্রসার লাভ করেছিল। বৃহস্পতিবার রাতে খড়্গপুরের বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর।
সংগঠক ও কবি যদুমণি বেসরার জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৭ মার্চ। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বিজাতলার করণজাই গ্রামে তাঁর জন্ম। পিতার নাম বিক্রম বেসরা। মাতা মালহা বেসরা। কটকের ব়্যাভেনশ কলেজ থেকে বি.কম. পাশ করে ভারতীয় রেলে চাকরি নেন। চাকরির সূত্রেই তিনি বাংলার খড়্গপুরে থাকতেন।
১৯৮১ সালে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। প্রথমদিকে সাঁওতালি কবিতা লিখতেন। পরবর্তীকালে অনেক গল্প, প্রবন্ধও রচনা করেন। তাঁর বহু লেখা তেতরে, সিলি, রিমিল, চায়চাম্পা, খেরওয়াল ডাহার ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। যদুমণির কবিতায় জীবনের জটিলতার নানান দিক খেলে বেড়াত। সেইসঙ্গে শোষণহীন সমাজের স্বপ্নও তুলে ধরতেন একের পর এক লেখায়। সমাজ ও জীবনই তাঁর কবিতার মূল সুর।
১৯৮৭ সালে গঠিত ‘অল ইন্ডিয়া সান্থালি রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাঁর পরিচিতি বাড়তে থাকে। একসময় তাঁর লেখক সত্তা সংগঠক সত্তার কাছে যেন আড়ালে চলে যায়। সংগঠক হিসেবে তিনি এতটাই সফল ছিলেন। সাঁওতালি লেখকদের উৎসাহদানের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অতুলনীয়।
যদুমণি কেবলমাত্র কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, সংগঠক নন, সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট কৃতিত্বের ছাপ রাখেন তিনি। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত ‘ফাগুন কোয়েল’ নামে বার্ষিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদনা করেন ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। এছাড়া, ‘অল ইন্ডিয়া সান্থালি রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন’ প্রকাশিত সাহিত্য পত্রিকা “মাত্তার”-এর যুগ্ম সম্পাদকের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
২০০২ সালে ‘ভাবনা’ কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। এই কাব্যগ্রন্থের জন্য ২০০৫ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান।
২৩ জুন রাতে হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তাঁর প্রয়াণে সাঁওতালি সাহিত্য সমাজ শোকে মুহ্যমান।