Latest News

‘শত্রু দেশেই আছে,’ আল খোমেইনি ও সরকারি আমলাদের পদত্যাগের দাবিতে সরব তেহরান

দ্য ওয়াল ব্যুরো: রবিবারের সন্ধ্যা। তেহরানের আজাদি স্কোয়ারে উপচে পড়ছে ভিড়। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কেউ তুলেছেন সরকার-বিরোধী স্লোগান। শনিবার ভুলবশত ইউক্রেনীয়ান বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হানার কথা তেহরান মেনে নেওয়ার পর থেকেই ক্ষোভের আগুন জ্বলেছে। ইরানের জায়গায় জায়গায় শুরু হয়েছে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ। তার মধ্যেই ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে গ্রেফতার করে সে দেশের সরকারের বিরাগভাজন হয়েছে ইরান। ক্ষোভের আগুনে যেন ঘি পড়ছে। রবিবার থেকে সোমবারের সকাল—আজাদি স্কোয়ারে হাজার তিনেক বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে ধর্মীয় নেতা আল খোমেইনি পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছেন। সরকারের শীর্ষ আমলাদের পদত্যাগের দাবিও উঠেছে দফায় দফায়।

ইউক্রেনীয় বিমানে ‘ভুল করে’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা ইরান মেনে নেওয়ার পরেই সেই ভুলের বিচারে চেয়ে পথে নেমে সরব হন তেহরানের মানুষ। শনিবার তেহরানের আমির কবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি মিছিল শুরু হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই শান্তি মিছিল চরম বিক্ষোভের চেহারা নেয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আল খোমেইনি-সহ সরকারের উচ্চপদস্থ আমলাদের পদত্যাগের দাবি ওঠে। এর পরেও রবিবার ইরাকের মাটিতে একটি মার্কিন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। বাগদাদের উত্তরে আল বালাড নামে ওই বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আছড়ে পড়ে চারটি রকেট, যাতে জখম হন চারজন। এই হামলার জন্যও ইরানকে দায়ী করে মার্কিন সেনা। রবিবারের সকালের হামলার পরে সন্ধে থেকে বিক্ষোভ ফের মাথাচাড়া দেয় ইরানের জায়গায় জায়গায়।

আজাদি স্কোয়ারের জমায়েত থেকে আওয়াজ ওঠে, ‘‘মিথ্যা বোঝাচ্ছেন দেশের নেতারা। তারাই সবচেয়ে বড় শত্রু, আমেরিকা নয়।’’ ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবারের মিছিলে যোগ দিয়ে আটক হন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রব ম্যাকেয়ার। বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে ঘণ্টাখানেক আটক করে রাখে ইরানি প্রশাসন। এই ঘটনাকে ভাল চোখে দেখেনি তেহরানের মানুষজন। কোনও রাষ্ট্রদূতকে এভাবে আটক করে রাখার ঘটনা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নজিরবিহিন। রব ম্যাকেয়ারকে আটক করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলেই দাবি তুলেছে ব্রিটেন।

আরও পড়ুন: ইরাকের বিমানঘাঁটিতে ফের রকেট হামলা মার্কিন সেনার! সাতটি মর্টার শেলে জখম চার

১৭৬ জন যাত্রী নিয়ে তেহরান বিমানবন্দরের বাইরে ইউক্রেনীয়ান বিমানটি ভেঙে পড়ার পর থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি জোরদার হয়। তেহরানের মানুষজনের মধ্যে বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে তখন থেকেই। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ক্ষেপণাস্ত্র হানার কথা বেমালুম চেপে গিয়েছিল ইরান সরকার। পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তারা এই কথা স্বীকার করলেও পাল্টা দোষ চাপায় আমেরিকার উপরেই। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ইরান সরকারকে, ‘মিথ্যুক’, ‘জায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁদের দাবি, রেভোলিউশনারি গার্ড কোরের এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময়েই বিমানটিতে পরপর দু’টি রকেট ছোড়া হয়। ভিডিও ফুটেজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রমাণও মিলেছে। অভিযোগ, বিমানটিতে যেহেতু কানাডার নাগরিকরা ছিলেন তাই জেনেবুঝেই হামলা চালিয়েছে ইরানি সেনাবাহিনী। নিরীহ প্রাণের হত্যা যুদ্ধাপরাধেরই সামিল।

অন্যদিকে, তেহরানের বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে টুইট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘তোমরা হাজার হাজার মানুষকে মেরেছো। বিক্ষোভকারীদের গায়ে হাত দিলে ফল ভাল হবে না। তেহরানে নজর রাখছে আমেরিকা।’’

You might also like