
মার্কিন অস্ত্রে সজ্জিত আফগান বাহিনীর সংখ্যা লাখ তিনেকের মতো। নিজেদের বিমান বাহিনীও রয়েছে আফগান সেনার। অন্যদিকে তালিবানের সংখ্যা ৭০ থেকে ৮০ হাজারের মতো। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদল ও জেলবন্দি আসামিদের নিয়ে নিজেদের দলের শক্তি বাড়িয়েছে তালিবান বাহিনী। বেশিরভাগেরই পায়ে জুতো নেই, আলাদা কোনও ইউনিফর্মও নেই। তাও তালিবান জঙ্গিদের শক্তির কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে আফগান সেনা, যা হতচকিত করেছে গোটা বিশ্বকেই।
কীভাবে জিতেছে তালিবান? কী কী অস্ত্র ব্যবহার করেছে?
২০০১ সালে ক্ষমতা হারাবার পরেও ক্রমাগত আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনীর তাড়া খেয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল তালিবান বাহিনী। আত্মসমর্পণও করেছিল। সামরিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গত ২০ বছর ধরে পালিয়ে বেড়িয়েছে তালিবান বাহিনী। গা ঢাকা দিয়ে থেকেই একটু একটু করে সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে। তারা জানত, একদিন মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়বেই, আর সেটাই হবে তাদের আক্রমণের নয়া কৌশল। এমনিতেও আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে তালিবানদের আধিপত্য ছিলই। আমেরিকা সেনা সরিয়ে নেওয়ার পরেই প্রাদেশিক রাজধানীগুলো তাদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে ওঠে। অতর্কিত হানায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি আফগান সেনাবাহিনীও। একের পর এক শহর তালিবানের দখলে চলে যায়।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকার সেনাবাহিনী যে ধরনের বায়োমেট্রিক ডিভাইস ব্যবহার করে তাই দেখা গেছে তালিবানের কাছে। এর নাম HIIDE (হ্যান্ডহেল্ড ইন্টেরাজেন্সি আইডেন্টিটি ডিটেকশন ইকুইপমেন্ট)। এই ডিভাইসে এমন স্ক্যানার আছে যাতে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্রের যাবতীয় তথ্য তালিবান বাহিনীর হাতে চলে আসে। ফিঙ্গারপ্রিন্টও পেয়ে যায় তারা। বায়োগ্রাফিকাল ইনফরমেশন কব্জায় চলে আসে। একের পর এক সরকারি ভবন তালিবানের দখলে চলে যায়।
আফগান বাহিনীর থেকে বেশিরভাগ অস্ত্রশস্ত্রই ছিনিয়ে নিয়েছিল তালিবান। রাশিয়ার তৈরি একে-৪৭ রাইফেল, এম-৪ কার্বাইন ও এম-১৬ রাইফেল ছিল তাদের হাতে। মার্কিন কোম্পানির তৈরি আধুনিক রাইফেলও রয়েছে তাদের সংগ্রহে।
আফগান সেনার থেকে হামভি (হাই মোবিলিটি মাল্টিপারপাস হুইলড ভেহিকল) ছিনিয়ে তালিবান। হাল্কা ওজনের এই সাঁজোয়া গাড়ি ভারী পে-লোড বইতে পারে। আগে আমেরিকা এই ধরনের সাঁজোয়া গাড়ি ব্যবহার করত। এখন সেই জায়গায় ফ্রন্টলাইন সার্ভিসে জয়েন্ট লাইট ট্যাকটিকাল ভেহিকল ব্যবহার করা হয়। কাঁধে নিয়ে ছোড়া যায় এমন ড্রোন গ্রেনেড লঞ্চারও রয়েছে তালিবানের হাতে।
আফগানিস্তানকে ভারতের উপহার দেওয়া এমআই-২৪ হেলিকপ্টার আগেই দখল করেছিল তালিবান। কুন্দুজে আধিপত্য বিস্তারের সময় এয়ার স্ট্রাইকের জন্য এই কপ্টার ব্যবহার করেছিল তালিবান বাহিনী। কন্দহর দখলের সময় আফগান সেনার হেলিকপ্টার ও সামরিক বিমানের দখল নেয় তালিবান। আমেরিকার তৈরি ব্ল্যাক হক মিলিটারি হেলিকপ্টারও রয়েছে তাদের কব্জায়।