
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আবারও ভোল বদলেছে করোনাভাইরাস (Covid-19)? ডেল্টা ও ডেল্টা-প্লাস ভ্যারিয়ান্টের পরে ফের করোনার নতুন প্রজাতি ছড়িয়ে পড়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজের বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডেল্টার থেকেও নতুন ভ্যারিয়ান্ট আরও বেশি সংক্রামক। জিনের গঠন বিন্যাস বের করে দেখা গেছে, করোনা ফের তার স্পাইক প্রোটিনের গঠন বদলে ফেলেছে। তাই নতুন প্রজাতির সংক্রামক ক্ষমতা আরও বেশি বেড়ে গেছে।
সার্স-কভ-২ ভাইরাসের এই নয়া ভ্যারিয়ান্টের নাম সি.১.২ (C.1.2)। প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় দক্ষিণ আফ্রিকায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ বছর মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় কোভিডের এই নতুন প্রজাতির দেখা মেলে। এর পরে চিন, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, মরিশাস, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, পর্তুগাল ও সুইৎজারল্যান্ডে সি.১.২ প্রজাতি ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট কী, কেন এত ছোঁয়াচে? ভ্যাকসিনে কতটা কাজ হবে?
কী কী বদল হয়েছে নতুন ভ্যারিয়ান্টে?
ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় সি.১ ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়ে। মনে করা হচ্ছে, এই ভ্যারিয়ান্টেরই জিনের গঠন বিন্যাস বদলে সি.১.২ ভ্যারিয়ান্ট তৈরি হয়েছে। নতুন এই প্রজাতিকে ‘উদ্বেগজনক‘ (ভ্যারিয়ান্ট অব কনসার্ন) বলছেন বিজ্ঞানীরা।
ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, গত বছর মার্চ থেকে করোনার যে প্রজাতি ভারতে ছড়াতে শুরু করেছিল তা এখন অনেক বদলে গিয়েছে। সুপার-স্প্রেডার হয়ে উঠেছে, মানে অনেক দ্রুত মানুষের শরীরে ঢুকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সার্স-কভ-২ হল আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) ভাইরাস। এর শরীর যে প্রোটিন দিয়ে তৈরি তার মধ্যেই নিরন্তর বদল হচ্ছে। এই প্রোটিন আবার অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে সাজানো। ভাইরাস এই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলোর কোড ইচ্ছামতো বদলে দিচ্ছে। কখনও একেবারে ডিলিট করে দিচ্ছে। এইভাবে বদলের একটা চেইন তৈরি হয়েছে। আর এই রূপ বদলের কারণেই নতুন নতুন প্রজাতির দেখা মিলতে শুরু করেছে।
সি.১.২ প্রজাতিতে N440K ও Y449H–এই দুই রকম মিউটেশন বা জিনের বিন্যাস বদলাচ্ছে। এর অর্থ হল করোনার স্পাইক প্রোটিনে অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিন্যাসে নির্দিষ্ট কোনও দুটি অ্যামাইনো অ্যাসিড তার নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে বদলে অন্য চেহারা নিচ্ছে। যে কারণে ভাইরাসের জিনের বিন্যাসও পুরোপুরি বদলে যাচ্ছে। এই প্রজাতিতে মিউটেশনের হার প্রায় ৫২ শতাংশ, যা চিন্তার কারণ বলেই মনে করছেন গবেষকরা।