
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, আমেরিকায় এখনও অবধি প্রায় সাড়ে ৬ কোটি কোভিড টেস্ট হয়েছে। যেখানে ভারতে মাত্র ১ কোটি ১০ লক্ষ কোভিড টেস্ট হয়েছে। অথচ ভারতের জনসংখ্যা ১৫০ কোটির কাছাকাছি। সেদিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে আমেরিকা। বিশ্বে সর্বাধিক করোনা পরীক্ষার রেকর্ড রয়েছে এ দেশেরই।
আমেরিকায় কোভিড সংক্রমণে মৃত্যুহার সবচেয়ে কম। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় তো বটেই। গত সাতদিনে কোভিড সংক্রমণের হার ১৪ শতাংশ কমে গেছে, এমনটাই দাবি ট্রাম্পের। এদিকে জন হপকিনস ইউনিভার্সিটির রিপোর্ট বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু দেড় লাখের বেশি। ফ্লোরিডায় ভাইরাসের সংক্রমণ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে অ্যারিজ়োনা, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়ার কোভিড পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য পরিষেবাও সঙ্কটে। প্রায় প্রতিদিনই ৬০ হাজারের উপর নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে আমেরিকায়।
ট্রাম্পের বক্তব্য, “কোভিড ভ্যাকসিন গবেষণাতেও এগিয়ে আমেরিকা। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি এ বছরের শেষেই আমরা ভ্যাকসিন নিয়ে আসব। ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
দেশে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য মার্কিন প্রশাসনের নিস্পৃহতাকেই দায়ী করেছেন অনেকে। সংক্রমণ বৃদ্ধির এই পরিস্থিতিতেও লকডাউনের রাশ আলগা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। সূত্রের খবর, এর পরেই দেশে করোনা সংক্রমণ একলাফে অনেকটাই বেড়ে যায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের যদিও বক্তব্য, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার কারণ হল কোভিড টেস্ট। তাঁর কথায়, “অ্যান্টিবডি টেস্ট ছাড়াও অন্যান্য টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। অন্যান্য দেশে যখন কেউ হাসপাতালে বা ডাক্তারের ক্লিনিকে যায় তখন তার টেস্ট করা হয়। তাই সেই কোভিড টেস্টের রিপোর্ট মোট সংখ্যায় যোগ হয় না। কিন্তু আমরা তো সঠিক সংখ্যাই দেখাচ্ছি। কোভিড টেস্টিংয়ের ফলে যে আক্রান্তদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে সেটাই দেখানো হচ্ছে।”
করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে সাহায্য করতে নানারকম আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাবব করেছেন ট্রাম্প, যেমন বছরের শেষে বেকারভাতা দেওয়া, শ্রমিকদের আয়কর কমানো, শিক্ষা সংক্রান্ত ঋণশোধ স্থগিত রাখা ইত্যাদি। বিরোধীদের বক্তব্য, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই এইসব চোখ ধাঁধানো প্রস্তাব দিয়ে দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন ট্রাম্প। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলে প্রেসিডেন্টের বিরাগভাজন হয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখ্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফৌজি। তিনি বলেছিলেন, শুরু থেকেই যদি কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হত তাহলে সংক্রমণ এত ছড়াত না। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পরেও লকডাউন শিথিল করেছে প্রশাসন। যার কারণে কয়েকটি রাজ্যে সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও হোয়াইট হাউসের বক্তব্য, ফৌজি অনেক ভুলভাল তথ্য দিয়েছেন। তাঁকে হোয়াইট হোয়াইস বিরোধী বলেও দাবি করা হয়েছে।