Latest News

ফোনে কোটির টোপ দিয়েছেন কোন মন্ত্রী? বিহার নিয়ে অন্তর্বিরোধের ঝড় বিজেপিতে

দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিহারে নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) জোট ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ায় বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে তাঁকে শাপশাপান্ত করলেও দলের অন্দরে (Inner clash in BJP) প্রশ্ন উঠেছে, ১৭ বছরের জোট সরকারের ভেঙে যাওয়ায়। বিজেপি সূত্রে খবর, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদী (Narendra Modi) বিহারের (Bihar) ঘটনায় দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে দলে নানা সময়ে আলোচনায়, মোদী নীতীশকে সাচ্চা সমাজবাদী এবং সৎ নেতা হিসাবে তুলে ধরেছেন। মার্চে অনুষ্ঠিত পাঁচ রাজ্যের ভোটের প্রচারে এবং টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারেও মোদী একথা বলেছেন।

আসলে মোদী জানেন, নীতীশ এনডিএ থেকে বেরিয়ে গেলে ইউপিএ-সহ বিরোধীরা তাঁকে ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করবে। নীতীশের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি প্রচারে বাড়তি গুরুত্ব পাবে।

প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও বিহারের চলতি পরিস্থিতির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং তাঁর প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছেন দলের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, এই দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়তি উৎসাহ বিহারে জোট সরকার ভেঙে যাওয়ার নেপথ্যে কাজ করেছে। ২০২০-র নভেম্বরে বর্তমান সরকার গঠনের পর থেকেই অমিত শাহ দিল্লি থেকে রিমোট কন্ট্রোলে বিহার বিজেপিকে চালিত করছিলেন। দলের মন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার স্পিকার, সবই বাছাই করে দিয়েছেন তিনি। অমিতের তৈরি তালিকায় সই করেছেন দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা।

বিজেপির অন্দরের জল্পনায় বাড়তি মাত্রা দিয়েছে গতকাল জনতা দল ইউনাইটেডের পরিষদীয় বৈঠকে নীতীশ কুমার ছয়টি অডিও টেপের কথা উল্লেখ করায়। নীতীশ বলেন, ওই ছয়টি টেপ হল, দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে জেডিইউ-র মন্ত্রী ও বিধায়কদের কয়েকজনের কথপোকথন। দুই মন্ত্রী কোটি কোটি টাকা অফার করেছেন মন্ত্রী, বিধায়কদের জেডিইউ ছেড়ে বেরিয়ে আসার জন্য। দেখা যায়, নীতীশ ওই অডিও টেপের কথা বলা মাত্র বিধায়করা সমস্বরে বলে ওঠেন, আজই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দেওয়া হোক। নীতীশ ইঙ্গিত দেন অডিও ক্লিপিংগুলি তিনি বিধানসভায় স্পিকারের হাতে তুলে দেবেন।

নীতীশের ওই বক্তব্য ফাঁস হতেই বিজেপির অন্দরেও জল্পনা শুরু হয়, কোন দুই মন্ত্রী এই কম্ম করে থাকতে পারেন। এমন নয় যে বিহারে নীতীশ কুমারকে সরিয়ে সরকার দখলের পরিকল্পনা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ছিল। কিন্তু সদ্য মহারাষ্ট্রে শিবসেনাকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। বিহারের পরের ভোট এখনও প্রায় তিন বছর বাকি আছে। ফলে এত তাড়াতাড়ি সেখানে সরকার ভাঙার প্রয়োজন ছিল না। মোদী-সহ শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকেরই ভাবনায় ছিল, এমন সময় সরকার ফেলার তোড়জোড় করা হবে যখন নীতীশ আর জাতীয় রাজনীতিতে পা ফেলার সুযোগ পাবেন না।

নীতীশের অভিযোগ কতটা সত্যি, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে অসত্য ধরে না নিয়ে বোঝার চেষ্টা করেছেন কারা হতে পারেন এই দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

গতমাসের মাঝামাঝি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ছিলেন জেডিইউ-র নেতা আরসিপি সিং। যদিও তাঁর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কই বেশি ছিল। নীতীশ এবার তাঁকে রাজ্যসভার টিকিট না দেওয়ায় মন্ত্রিত্ব গিয়েছে আরসিপি-র। টাকার টোপ দিয়ে নীতীশকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা তিনি করে থাকতে পারেন, মনে করছে বিজেপির একাংশ।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিহারের নেতা এবং অমিত শাহের ছায়া সঙ্গী, একই সঙ্গে তীব্র নীতীশ বিরোধী। তিনি বিগত কয়েক মাস যাবৎ দাবি করে আসছিলেন, নীতীশের উচিত এবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রিত্ব বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া। বিহার বিজেপির আর এক নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংও প্রায়ই নীতীশের সরকারের বিরুদ্ধে তর্জন গর্জন করে থাকেন।

শপথ নিলেন নীতীশ, তেজস্বী, চাচা মুখ্যমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন ভাতিজা উপমুখ্যমন্ত্রী

You might also like