
ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স, উত্তরাখণ্ড –
ব্রিটিশ পর্যটক ফ্রাঙ্ক স্মিথ পথ হারিয়েই চলে এসেছিলেন এক উপত্যকায়। হিমালয়ের কোলে এই উপত্যকার ফুলের শোভা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কয়েকশো রকমের ফুল তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন। পরে দেশে ফিরে বই লিখেছিলেন ‘দ্য ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’। সেই থেকেই উত্তরাখণ্ডের এই জায়গার নাম তাঁর বইয়ের নামেই রাখা হয়। বিশেষ করে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এখানে গেলে বিভিন্ন রঙের এবং প্রজাতির ফুল এখানে দেখতে পাওয়া যায়।
বৃন্দাবন, উত্তরপ্রদেশ –
উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলার বৃন্দাবনে সারাবছরই তীর্থযাত্রীদের ভিড় জমে। শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার বহু মন্দির এই জায়গায় রয়েছে। তবে এই জায়গা ‘বিধবা নগরী’ নামেও পরিচিত। শোনা যায় ১৫ থেকে ২০ হাজার বিধবা এখানে বসবাস করেন। তবে রঙের উৎসব হোলির সময় এই বৃন্দাবনই হয়ে উঠে দেশের সবথেকে রঙিন জায়গা। লাল, হলুদ, গোলাপি রঙে রাঙানো হয় বিধবাদেরও। কয়েকবছর ধরে বিশেষ করে হোলির সময় বেশি ভিড় জমতে দেখা যাচ্ছে এখানে।
বারাণসী, উত্তরপ্রদেশ –
ভারতের অন্যতম প্রাচীন এই শহরকে অনেকে বেনারসও বলে। বারাণসীকে ভারতের ‘মন্দির নগরী’ বলা হয়। গঙ্গার ধারেই ছড়িয়ে আছে ২০০০টির বেশ মন্দির। তবে বাঙালিদের অন্যতম প্রিয় এই জায়গার সঙ্গেই জড়িয়ে আছে বহু স্মৃতি। অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায় বহু সিনেমার শ্যুটিং করেছেন এই বারাণসীতে। সারাবছরই এখানে পর্যটকের, তীর্থযাত্রীদের ভিড় জমতে দেখা যায়।
জয়পুর, রাজস্থান –
১৮৭৬ সালে জয়পুরের রাজা রাম সিং, প্রিন্স অফ ওয়েলস এবং কুইন ভিক্টোরিয়া আসছেন শুনেই, তাঁদের অভ্যর্থনা জানানোর আগে নিজের শহরের ঘর, বাড়ি, দোকান সব গোলাপি রঙে রাঙানোর আদেশ দেন। সেই থেকেই এর নাম হয় ‘পিঙ্ক সিটি’। সেই রীতি মেনে এখনও গোলাপি রঙেই সাজানো হয় শহরের বাড়ি, ঘর। রঙিন এই শহর দেখতে ভিড় জমে সারা বিশ্বের পর্যটকদের।
যোধপুর, রাজস্থান –
গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরমে ছটফট করে এখানকার মানুষেরা। বাড়ির ভিতরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে, গরমের হাত থেকে বাঁচতে তাই বাড়ির বাইরে নীল রঙে রাঙিয়ে তুলতে শুরু করলেন ওখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। যোধপুরের মেহেরনগড় ফোর্টের উপরে দাঁড়িয়ে দেখা যায় এই নীল রঙের পাশাপাশি সমস্ত বাড়ি। হুবহু মরক্কোর নীল শহরের মতো দেখতে হওয়ায় অনেকেই ভারতের ‘ব্লু সিটি’ নামে ডাকে।
মধুবনী, বিহার –
বিহারের মধুবনী শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে মধুবনী চিত্রকলা। সেখানকার বাড়ি, ঘরের দেওয়াল যেমন মধুবনী আঁকায় ভরানো থাকে, তেমনই নতুন কোনও বিশেষ অনুষ্ঠান হলেই স্থানীয় চিত্রশিল্পীরা মধুবনী শিল্পে নতুন ছবি আঁকেন। ভারতের মধ্যেই এমন রঙিন শহরে যাঁরা এখনও পা রাখেননি, সামনের বছরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই যেতে পারেন এই শহরে।
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ –
‘সিটি অফ জয়’ কেন বলা হয় এখানে পা না রাখলে বোঝা যাবে না। বিশেষ করে দুর্গাপুজোর সময় সারা বিশ্বের মানুষের ভিড় জমে এই শহরে। দিল্লির আগে কলকাতা ছিল ভারতের রাজধানী। ফলে ব্রিটিশ আদব কায়দায় তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ। এমনকি বাড়িও। বছরের যেকোনও সময়ই ঘুরতে আসা যায় এই শহরে।
মাদুরাই, তামিলনাড়ু –
রঙিন কারুকার্যময় মন্দিরের জন্যেই বিখ্যাত মাদুরাই। শহরের রাজপথেই শাড়ি এবং ধুতি পরেই ছেলেমেয়েদের ঘুরতে দেখা যায়। এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ভারতে সবথেকে বেশি পর্যটকদের ভিড় জমে মাদুরাইয়ে।
পন্ডীচেরি, তামিলনাড়ু –
তামিলনাড়ুর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় পন্ডীচেরি একেবারেই আলাদা। ফ্রেঞ্চ কলোনির বাড়ি, ঘর দেখলে ভারতে আছেন না বিদেশে অনেকেই ভুলে যাবেন। ফরাসি আদলেই তৈরি করা হয় এখানকার বাড়ির জানলা, বারান্দা। রঙও করা হয় সেভাবে। পন্ডীচেরিকে ভারতের অন্যতম স্টাইলিশ শহর বলেন অনেকে।