
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার (Fraud) ঘটনা ঘটে হামেশাই। গোটা দেশেই ছড়িয়ে রয়েছে এই প্রতারণার জাল। অবশেষে ভারতের সবচেয়ে বড় প্রতারণা চক্রের (India’s Biggest Ever Job Fraud) পর্দাফাঁস করল পুলিশ। ওড়িশা পুলিশের (Ordisha Police) হাতে ধরা পড়ল সেই চক্রের ‘মাস্টার মাইন্ড’।
ওড়িশা পুলিশের আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখার (EOW) অফিসাররা গোপন অভিযান চালিয়ে এই প্রতারণা চক্রের মূলচক্রী জাফর আহমদকে (২৫) উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করেন। আলিগড়ে বসেই এই চক্র পরিচালনা করত জাফর।
এই চক্রের নিশানায় ছিল মূলত গুজরাত, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বেকার যুবক-যুবতীরা। ওড়িশা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘আলিগড় পুলিশের সহায়তায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তদন্ত চলছে। এই চক্রের শিকড় অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশাল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের যোগ রয়েছে।’
কে এই জাফর? পুলিশ সূত্রে খবর, জাফর আহমদ একজন ইঞ্জিনিয়ার। মাত্র ২৫ বছর বয়েসেই সে এই চক্রের মাথায় উঠে আসে। তবে জাফর একা নয়, এর পিছনে আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই চক্রের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন দেশের প্রায় ৫০ হাজার চাকরিপ্রার্থী। পাশাপাশি কোটি কোটি টাকা প্রতারণা হয়েছে।
কীভাবে এই চক্র শুরু হয়? সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের একদল ইঞ্জিনিয়ার এই চক্রের নির্মাতা। প্রথমে কয়েকজন ওয়েবসাইট ডেভলপারের সাহায্যে কিছু ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। সেইসব ওয়েবসাইট দিয়েই অনলাইনে প্রতারণা চক্র চলে। পাশাপাশি ৫০ জনকে কল সেন্টারে চাকরি দেওয়া হয়। তাঁদের মাসে ১৫ হাজার টাকা করে বেতন দিয়ে নিয়োগ করা হয়েছিল।
যদিও এই ৫০ জন ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি যে তাঁরা দেশের হাজার হাজার বেকারের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। মূলত উত্তরপ্রদেশের জামালপুর ও আলিগড় থেকেই ৫০জনকে নির্বাচিত করে কল সেন্টারে চাকরি দেওয়া হয়েছিল।
প্রতারকরা ৫৩০টি মোবাইল ফোন ও হাজারেরও বেশি সিম কার্ড ব্যবহার করেছে বলে পুলিশের ধারণা। তারা মূলত হোয়াটসঅ্যাপ ভয়েস কলের মাধ্যমে বেকার যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। কে কোথা থেকে ফোন করছে, সেটা যাতে পুলিশ বা অন্য কেউ ট্র্যাক করতে না পারে তাই হোয়াটসঅ্যাপকেই বেছে নিয়েছিল প্রতারকরা।
‘জন সেবা কেন্দ্র’কে কাজে লাগিয়ে টাকা তুলত প্রতারকরা। সারা দেশে ১০০টি ভুয়ো নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যার মাধ্যমে লেনদেন হত। সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখাত তারা। এমনকী এইসব ভুয়ো ওয়েবসাইটকে সরকারি ওয়েবসাইটের মতোই ডিজাইন করা হয়েছিল।
খবরে কাগজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন দিতে প্রতারকরা। তারপরই চাকরির লোভ দেখিয়ে টাকা নেওয়া হত বলে পুলিশের দাবি। মূলত রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে ট্রেনিং— এইসব বলে হাজার হাজার টাকা তুলত চাকরিপ্রার্থীদের থেকে। এভাবেই ভারতের মধ্যে এক বিরাট প্রতারণার জাল ছড়িয়ে ফেলেছিল এই প্রতারকরা। এই চক্রের বাকি সদস্যদের হদিশ পেতে পুলিস তদন্ত চালাচ্ছে।
পঞ্চায়েত-লোকসভা, জোড়া ভোটে মমতার বাংলায় অমিত-জেপি জুটি, এ মাসেই ৪ সভা